যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে গতকাল ২৯ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) দেশে প্রত্যাবর্তন করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, এসবিপি, ওএসপি, এনডিইউ, পিএসসি, পিএইচডি। যুক্তরাষ্ট্রের চিফ অব স্টাফ অব দি আর্মি জেনারেল জেমস সি. ম্যাকনভিলের আমন্ত্রণে তিনি যুক্তরাষ্ট্র সফরে গমন করেন।
সফরকালে গত ২০ এপ্রিল থেকে ২২ এপ্রিল ২০২২ ইং তারিখ পর্যন্ত তিনি ওয়াশিংটন ডিসি’র পেন্টাগনে চিফ অব স্টাফ অব দি আর্মি জেনারেল জেমস সি. ম্যাকনভিল, ন্যাশনাল গার্ড ব্যুরো’র প্রধান ও জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের সদস্য জেনারেল ডেনিয়েল আর. হোকানসন, ভাইস চিফ অব স্টাফ অব দি আর্মি জেনারেল জেমস এম. মার্টিন, ম্যারিন কোরের এ্যাসিসট্যান্ট কমান্ড্যান্ট জেনারেল এরিক এম. স্মিথ এবং অফিস অব আন্ডার সেক্রেটারি অব ডিফেন্স ফর পলিসি’র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিষয়ক প্রধান পরিচালক লরি এবেলের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাৎকালে দুই দেশের সেনাবাহিনীর স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়, বিশেষ করে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন, দুর্যোগ পরবর্তী মানবিক সহায়তা ও প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়াদি প্রাধান্য পায়। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনির্ভাসিটির নিয়ার ইস্ট সাউথ এশিয়া (NESA) এর প্রাক্তন গ্র্যাজুয়েট হওয়ায় সেনাবাহিনী প্রধানকে NESA সেন্টারের ‘হল অব ফেইম’-এ আনুষ্ঠানিকভাবে অধিষ্ঠিত করা হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে NESA সেন্টারের স্বনামধন্য প্রফেসরগণ সহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের প্রাক্কালে সেনাবাহিনী প্রধান সেখানকার লিংকন হলে দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিষয়ে কী-নোট বক্তব্য প্রদান ও প্রশ্নোত্তর পর্বে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এছাড়াও তিনি ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত ‘ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব দি ইউএস আর্মি’ পরিদর্শন করেন।
সফরের শেষভাগে গত ২৫ এপ্রিল থেকে ২৬ এপ্রিল ২০২২ ইং তারিখ পর্যন্ত নিউইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘের সিকিউরিটি এ্যান্ড সেফটি বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল গিলেজ মিচাউদ, ভারপ্রাপ্ত মিলিটারি এ্যাডভাইজার মেজর জেনারেল মওরিন ও’ব্রায়ান, পলিটিক্যাল ও পিস বিল্ডিং এ্যাফেয়ার্স বিভাগের এ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ খালেদ খিয়ারি, অপারেশন সাপোর্ট বিভাগের এ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল ক্রিশ্চিয়ান সন্ডার্স এবং পুলিশ এ্যাডভাইজর লুইস রিবেরিও ক্যারিলহো এর সাথে বৈঠকে মিলিত হন।
সেনাবাহিনী প্রধানের সাথে সাক্ষাৎকালে তাঁরা বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী, বিশেষ করে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ সকল বৈঠকে জাতিসংঘ মিশনে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী ও সরঞ্জামাদি’র সংখ্যা বৃদ্ধি এবং দীর্ঘদিন যাবত ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি প্রতিস্থাপনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। এছাড়াও সেনাবাহিনী প্রধান এবং প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর-এট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিনের সম্মানে নিউইয়র্কে অবস্থিত বাংলাদেশের জাতিসংঘ পার্মানেন্ট মিশন কর্তৃক আয়োজিত ইফতার এবং নৈশভোজে তিনি অংশগ্রহণ করেন।
সেনাবাহিনী প্রধানের এই সফরের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মধ্যকার সুসম্পর্ক ও সহযোগিতার ক্ষেত্র বৃদ্ধি এবং জাতিসংঘে নিয়োজিত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের অবস্থান ও তাদের মনোবল আরোও সুদৃঢ় হবে বলে আশা করা যায়।