কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের আগে জমি অধিগ্রহণের ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় বাদীর স্বাক্ষর ও নথি জালিয়াতি করে নিজের নাম কেটে দেন প্রধান আসামি সাবেক জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিন। এ কাজে তাঁকে সহায়তা করেন কক্সবাজারের তৎকালীন জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদারসহ চারজন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দুদকের কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিনের দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। গত সোমবার কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, হুলিয়া ও ক্রোক-পরোয়ানা জারির আবেদন জানানো হয়। বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন ও বিশেষ জজ আদালতের নাজির মো. বেদারুল আলম।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জমি অধিগ্রহণের প্রায় ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিনকে প্রধান আসামি করে ২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন মাতারবাড়ীর বাসিন্দা এ কে এম কায়সারুল ইসলাম চৌধুরী। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য দুদককে নির্দেশ দেন। মামলার পরপরই ১ নম্বর আসামি রুহুল আমিনের নাম বাদ দিয়ে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে নথিপত্র পাঠান তৎকালীন জেলা ও দায়রা জজ মো. সাদিকুল ইসলাম তালুকদার।
দুদক কক্সবাজার আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবদুর রহিম জানান, ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বরের মামলা থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিনের নাম বাদ দেওয়ার ঘটনা জানতে পেরে কয়েক দিন পর একই আদালতে জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন, জেলা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মামলা করেন বাদী কায়সারুল ইসলাম চৌধুরী। সেই মামলার তদন্ত শেষে গত সোমবার আদালতে পাঁচজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে দুদক। নথি জালিয়াতির ঘটনায় বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করায় সাবেক জেলা প্রশাসক ও জেলা জজ ছাড়াও আসামি করা হয়েছে বাদীপক্ষের আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নাজির স্বপন কান্তি পাল এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্টেনোগ্রাফার মো. জাফর আহমদকে।