৪৩তম বিসিএসে বাদ পড়া ২২৭ জনের প্রজ্ঞাপনের কী হলো
সিএইচটি টিভি ডেস্ক
  • প্রকাশিত : 17-04-2025
ফাইল ছবি : সংগৃহীত

৪৩তম বিসিএসে দ্বিতীয় গেজেট থেকে বাদ পড়া ২২৭ জনের নিয়োগের প্রজ্ঞাপনের কার্যক্রম কত দূর তা নিয়ে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন গেজেট–প্রত্যাশীরা। দ্রুত সময়ের মধ্যে যাতে এই সমস্যার সমাধান হয় সে কথাও জানিয়েছেন এই চাকরিপ্রার্থীরা। প্রার্থীরা বলেন, এখন বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার সময়। সেই স্বপ্নে সবাই কাজও করছেন। এই সরকার এসে অনেক গেজেটে বাদ পড়া ব্যক্তিদের নিয়োগ দিয়েছে। সেই সময় এসে আমাদের গেজেট থেকে নাম বাদ পড়া চূড়ান্ত হতাশার। আমরা চাই, দ্রুত সরকার আমাদের নিয়োগ দিয়ে বৈষম্যহীন বাংলাদেশের প্রমাণ অক্ষুণ্ন রাখুক।

৪৩তম বিসিএসে দ্বিতীয় গেজেট থেকে বাদ পড়া ২২৭ জনের নিয়োগের প্রজ্ঞাপনের কার্যক্রম কত দূর তা জানতে চেয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর। তাঁদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা বাদ পড়াদের ফাইল প্রধান উপদেষ্টা বরাবর পাঠিয়েছি। যত দূর শুনেছিলাম, বৈশাখের আগেই এ বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। সম্ভবত কয়েকজন উপদেষ্টা দেশের বাইরে আছেন, তাই এটি চূড়ান্ত করা যায়নি। কবে চূড়ান্ত হবে সে বিষয়ে আমার কোনো ধারণা নেই।

 

 

৪৩তম বিসিএসে দ্বিতীয় গেজেট থেকে বাদ পড়া ২২৭ জনের নিয়োগের প্রজ্ঞাপন দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকাশের দাবি জানিয়েছিলেন বিভিন্ন ক্যাডারে বাদ পড়া প্রার্থীরা। সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীরা বলেন, ‘বিসিএসের ইতিহাসে একবার গেজেট প্রকাশিত হওয়ার পর নিয়োগ স্থগিত করার উদাহরণ আর দ্বিতীয়টি নেই। আমাদের নিয়োগ স্থগিত করে ৩০ ডিসেম্বর (২০২৪) গেজেট প্রকাশিত হলে ৩১ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সামনে আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করি। এরপর ২ জানুয়ারি আমাদের কাছে পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদনপত্র চাওয়া হয়। আমরা আবেদন করি এবং সুবিচারের আশায় অপেক্ষা করতে থাকি। এরপর ৯ জানুয়ারি (২০২৫) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব গণমাধ্যমকে বলেন, কারও বিরুদ্ধে যদি ফৌজদারি অপরাধ, রাষ্ট্রদ্রোহ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কারাদেশ না থাকে, তবে তাঁরা যোগদান করতে পারবেন। কিন্তু দুই মাস পেরিয়ে গেলেও সেই গেজেট আলোর মুখ দেখেনি। আমাদের জীবন যেন থমকে গেছে সেই ৩০ ডিসেম্বরে।’

 

 

প্রার্থীরা আরও বলেন, ‘দীর্ঘ পাঁচ বছরের অপেক্ষা শেষে ৪৩তম বিসিএসে আমাদের ব্যাচমেটরা গত ১৫ জানুয়ারি চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। তাঁরা আসন্ন ঈদুল ফিতরের বেতন-বোনাসসহ পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, সেখানে আমরা ২২৭ জন পরিবারকে মুখ দেখানোর অবস্থায়ও নেই। আমাদের অনেকেই তাদের মা–বাবার বয়স ও অসুস্থতা বিবেচনা করে এত বড় দুঃসংবাদ এখনো পরিবারকে জানাননি। কারণ, আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিয়োগ পাব—এই আশ্বাস পেয়েছিলাম। আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, দ্রুততম সময়ের মধ্যে যেন আমাদের ২২৭ জনের মধ্যে নিরপরাধ সবার গেজেট প্রকাশ করা হয়। এটি আমাদের ন্যায্য অধিকার, এটি আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন, আমাদের আত্মসম্মানের প্রশ্ন। আমরা আশাবাদী, রাষ্ট্র আমাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের স্বপ্নের চাকরিতে যোগদানের সুযোগ করে দেবে।’

 

৪৩তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর। প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষে ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর ২ হাজার ১৬৩ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করেছিল সরকারি কর্ম কমিশন। ভেরিফিকেশন শেষে ৯৯ জনকে বাদ দিয়ে গত বছরের ১৫ অক্টোবর ২ হাজার ৬৪ জনকে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দিয়ে প্রথম গেজেট প্রকাশ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এরপর ৩০ ডিসেম্বর ওই প্রজ্ঞাপন বাতিল করে প্রথম সুপারিশ করা ২ হাজার ১৬৩ প্রার্থীর মধ্য থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অনুপস্থিত ৪০ জন এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন বিবেচনায় সাময়িকভাবে অনুপযুক্ত ২২৭ জনসহ মোট ২৬৭ জনকে বাদ দিয়ে ১ হাজার ৮৯৬ জনকে নিয়োগের দ্বিতীয় প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

শেয়ার করুন