আজ ১৮ মে (বুধবার) আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস। প্রতিবছরই একটি শ্লোগান সামনে রেখে এ দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরা হয়- যাতে ছাত্র, শিক্ষক, গবেষক এবং পণ্ডিত ব্যক্তিদের গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি হয় এবং বিশ্ব নাগরিকরা জাদুঘর ও তার আপন ঐতিহ্য সম্পর্কে ভাবতে শেখে।
এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে পাওয়ার অব মিউজিয়াম। ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব মিউজিয়ামসের আহ্বানে ১৯৭৭ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হচ্ছে। ১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় আইসিওএম। এর সদস্য হিসেবে বর্তমানে ১০৭ দেশের ২৮ হাজার জাদুঘর যুক্ত রয়েছে।
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর প্রতিবছর দিবসটিতে বর্ণাঢ্য র্যালি, বিষয়ভিত্তিক সেমিনার ও বিশেষ প্রদর্শনী আয়োজন করে থাকে। দিবসটি উপলক্ষে এ বছরও বিস্তারিত কর্মসূচি রয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে র্যালি এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আজ সকাল সাড়ে ৮টায় শাহবাগস্থ বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর প্রাঙ্গণে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। জাতীয় জাদুঘরের সভাপতি অধ্যাপক ডঃ অ আমস আরেফিন সিদ্দিকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আবুল মনসুর।
জাদুঘর এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন সমূহের সংগ্রহ সংরক্ষিত থাকে। জাদুঘরে বৈজ্ঞানিক, শৈল্পিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন বস্তুসমূহ সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করা হয় এবং তা জনসমক্ষে প্রদর্শন করা হয়।
জানা গেছে, এ উপমহাদেশে ব্রিটিশদের মাধ্যমে জাদুঘরের ধারণাটি এসেছে। ভারতীয় এশিয়াটিক সোসাইটির সদস্যগণ এই অঞ্চলের জাতিতাত্ত্বিক, প্রত্নতাত্ত্বিক, ভূ-তাত্ত্বিক এবং প্রাণীবিষয়ক নমুনা সংগ্রহ করে সেগুলোকে যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের ব্যাপারে উদ্যোগী হন। লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস, যিনি এশিয়াটিক সোসাইটির পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তিনি কলকাতার পার্কস্ট্রিটে জমির ব্যবস্থা করেন।
১৮০৮ সালে সেখানে জাদুঘরের জন্য ভবন নির্মাণ শেষ হয়। এই প্রক্রিয়ায় ১৮১৪ সালে উপমহাদেশের প্রথম জাদুঘর এশিয়াটিক সোসাইটি মিউজিয়াম -এর জন্ম ও প্রতিষ্ঠা হয়। আর ১৯১০ সালের এপ্রিলে দিঘাপতিয়া রাজপরিবারের সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতায় শরৎকুমার রায়ের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর হচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম জাদুঘর। এটি নির্মাণ শেষ হয় ১৯১৩ সালে। বাংলাদেশে শতাধিক জাদুঘর আছে। তবে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরই দেশের প্রধান জাদুঘর হিসেবে বিবেচিত।