কৃষি খাতে কাজের জন্য বাংলাদেশ থেকে মৌসুমি কর্মী (সিজনাল ওয়ার্কার) নেবে গ্রিস। এতে করে প্রতিবছর ৪ হাজার বাংলাদেশি কাজের সুযোগ পাবেন ইউরোপের এই দেশটিতে।
একই সঙ্গে সেখানে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিরাও পর্যায়ক্রমে বৈধভাবে কাজ করার সুযোগ পাবেন। এজন্য কাগজপত্র তৈরির ফি ছাড়া আর কোনো টাকা খরচ হবে না।
এ লক্ষ্যে বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ও হেলেনিক রিপাবলিক গ্রিসের মধ্যে কর্মী পাঠানোর বিষয়ে এক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে।
রাজধানীর কাকরাইলে প্রবাসী কল্যাণ ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি এবং গ্রিসের পক্ষে দেশটির মিনিস্টার অব মাইগ্রেশন অ্যাণ্ড অ্যাসাইলাম প্যানাইয়োটিস মিতারাচি এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন।
এসময় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন এবং গ্রিসের সেক্রেটারি জেনারেল অব মাইগ্রেশন পলিসি পেট্রোক্লস জর্জিওজিয়াডিস উপস্থিত ছিলেন।
এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ফলে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য গ্রিসে বৈধভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হলো।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, কর্মীদেরকে ৫ বছর মেয়াদি অস্থায়ীভাবে কাজের অনুমতি (ওয়ার্ক পারমিট) দেওয়া হবে। চুক্তির আওতায় কৃষি খাতে ‘মৌসুমি কর্মী‘ নেওয়া হবে। পরবর্তীতে উভয় দেশ আলোচনাক্রমে চাহিদার ভিত্তিতে সেক্টরের সংখ্যা বাড়াবে। ৫ বছরের মেয়াদ শেষে তাদের বাংলাদেশে ফেরত আসতে হবে। তবে তারা কর্মসংস্থানের জন্য গ্রিসে যেতে পারবেন। আবেদনের সময় বৈধ ট্রাভেল ডকুমেন্ট, বৈধ ওয়ার্ক কনট্রাক্ট, অসুস্থতাজনিত ইনস্যুরেন্সের প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে এবং নির্ধারিত ফি ও ব্যয় বহন করতে হবে।
এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী বলেন, ইউরোপের কোনো দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের কর্মসংস্থান সংক্রান্ত এটিই প্রথম সমঝোতা স্মারক। এর মাধ্যমে বাংলাদেশি কর্মীরা নিরাপদে গ্রিসে বৈধভাবে কাজ করতে পারবে।
তিনি বলেন, নিয়োগের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার পর সম্পূর্ণ নিয়োগকর্তার খরচে গ্রিসে যেতে পারবেন বাংলাদেশি কর্মীরা। এক্ষেত্রে আগ্রহী কেউ যেন কোনোভাবে কোনো দালাল বা প্রতারকের খপ্পরে না পড়েন, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পর প্রেস ব্রিফিংয়ে গ্রিক মন্ত্রী জানান, এই চুক্তিটি তাদের দেশের সংসদে অনুমোদনের মাধ্যমে শিগগিরই বাস্তবায়ন করা হবে।
গ্রিসের মিনিস্টার অব মাইগ্রেশন অ্যাণ্ড অ্যাসাইলাম প্যানাইয়োটিস মিতারাচি বলেন, বাংলাদেশি কর্মীরা পরিশ্রমী। কিন্তু মানবপাচারকারীরা তাদের ফাঁদে ফেলে সর্বশান্ত করছে। এ চুক্তির ফলে বাংলাদেশি কর্মীদের স্বার্থ সংরক্ষিত হবে।