গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকাল ৮টায় শুরু হয় ভোটগ্রহণ; একটানা চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। নগরীর ৪৮০টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট হচ্ছে। প্রতিটি কেন্দ্রে রয়েছে সিসি ক্যামেরা।
সকালে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই কেন্দ্রে এসে লাইনে দাঁড়ান ভোটাররা। আটটা বাজার সঙ্গে সঙ্গেই খুলে দেয়া হয় ভোটকেন্দ্র। আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে নিজের পরিচয় শনাক্ত করে ভোট দেয়ার অনুমতি পান ভোটাররা। পরে গোপন কক্ষে গিয়ে প্রয়োগ করছেন নিজের ভোটাধিকার।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন (গাসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী আটজন। তবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. আজমত উল্লা খান এবং সাবেক মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুনের মধ্যে। এ নির্বাচনে আজমত উল্লা খান দলীয় প্রতীক ‘নৌকা’ এবং জায়েদা খাতুন ‘টেবিল ঘড়ি’ প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।
গত মঙ্গলবার (২৩ মে) মধ্যরাতে এ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শেষ হয়। ৯ মে থেকে টানা ১৫ দিন প্রচার চালিয়েছেন প্রার্থীরা।
এর আগে, ২০১৮ সালের ২৬ জুন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ছটি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট হয়েছিল। সে সময় কিছু কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরাও ছিল। তবে ওই নির্বাচনে সহিংসতায় কয়েকটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত হয়েছিল। এবার ৪৮০টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৩৫১টি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রত্যেক কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৭ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ ভালো। নির্বাচনী মাঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন। তাদের পাশাপাশি প্রতিটি ওয়ার্ডে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও থাকবেন। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৬-১৭ সদস্য মোতায়েন রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আটজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ডে ২৪৬ জন এবং ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৭৮ জন কাউন্সিলার পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ফয়সাল আহমেদ সরকার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন।
এ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪৮০টি এবং ভোটকক্ষ ৩৪৯৭টি। মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬। এর মধ্যে পুরুষ ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২, নারী ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ১৮ জন। নির্বাচনে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ১০ হাজার ৯৭০ জন। প্রিসাইডিং অফিসার ৪৮০, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ৩৪৯৭ এবং পোলিং অফিসার ৬৯৯৪ জন।
এছাড়া ৪৮০টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৩৫১টি ঝুঁকিপূর্ণ এবং বাকি ১২৯টিকে সাধারণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ হিসাবে ৭৩ শতাংশ কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের যাত্রা শুরু হয় ২০১৩ সালে। আয়তনের দিক থেকে দেশের সবচেয়ে বৃহৎ সিটি করপোরেশন এলাকা। এর আগে দুবার মেয়র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। একবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও আরেকবার বিএনপির প্রার্থী জয়ী হয়েছিলেন।