নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে দেশের অর্থনীতিতে- মাহবুবুল আলম
সিএইচটি টিভি ডেস্ক
  • প্রকাশিত : 03-01-2024
ফাইল ছবি : সংগৃহীত

দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. মাহবুবুল আলম।

 

গতকাল মঙ্গলবার এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত ‘বিল্ডিং এ রেজিলিয়েন্ট ইকোনমি ফর ভিশন ২০৪১ : কি চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড ওয়ে ফরোয়ার্ড’ শীর্ষক কর্মশালায় এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম এই মন্তব্য করেন।

 

 

দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছেএফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, কভিড সংকট-পরবর্তী পরিস্থিতি, বর্তমান বিশ্ব ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, রাশিয়া-ইউক্রেন এবং মধ্যপ্রাচ্যে সংঘটিত যুদ্ধের ফলে অর্থনীতিতে এমন নেতিবাচক ধারা তৈরি হয়েছে।

 

এ জন্য বেসরকারি খাতকে এগিয়ে নিতে দীর্ঘমেয়াদি ঋণপ্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ ও সহজীকরণের পাশাপাশি ট্যাক্স জিডিপি বাড়াতে করকাঠামো পুনর্গঠন ও ব্যবসাবান্ধব করা এবং কর আহরণপ্রক্রিয়া সহজীকরণের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

 

 

ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন উল্লেখ করে মাহবুবুল আলম বলেন, এমন পরিস্থিতিতে রূপকল্প ২০৪১ অনুযায়ী রেজিলিয়েন্ট ইকোনমি অর্জনের জন্য অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক খাতকে সুসংগঠিত করতে সরকারি ও বেসরকারি খাতের সমন্বিত প্রচেষ্টায় বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে আর্থিক কার্যক্রমকে স্মার্টভাবে পরিচালনার জন্য সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

 

 

তিনি বলেন, ‘উন্নয়নের ধারা দ্রুত এগিয়ে নেওয়ার জন্য আমাদের ভিত মজবুত হয়েছে। এখন প্রয়োজন বিভিন্ন খাতের অগ্রগতি সুসংহত, সমন্বিত ও ত্বরান্বিত করা।
 

কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। বিগত বছরে বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের বিরাট বাজার আছে, সক্ষমতা আছে, অনেক জটিলতার মধ্য দিয়েও আমরা আজ এত দূর পর্যন্ত এসেছি।’ তিনি বলেন, সব সময়ই যে বাইরের দেশের ফর্মুলায় চলতে হবে, এমন নয়। নিজেদের সক্ষমতা বেড়েছে।

 

কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে সাত লাখ আইটি এক্সপার্ট দরকার। কয়েক বছর পর হয়তো ১০ লাখ দরকার হবে। কিন্তু দক্ষতার অভাবে আমরা পাঠাতে পারছি না।’ দক্ষ লোকবল না গড়ে উঠলে ভবিষ্যতে উচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহারে বিদেশ থেকে লোক আনতে হবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন বাণিজ্যসচিব।

 

 

শিক্ষার মান বাড়ানো জরুরি উল্লেখ করে এনবিআর সদস্য মাসুদ সাদিক বলেন, প্রতিবছর বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার নিয়ে যায় বিদেশিরা, অথচ দেশের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা শেষ করে চাকরি পাচ্ছে না।

 

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিস এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআইয়ের প্যানেল উপদেষ্টা ড. মাশরুর রিয়াজ। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ভিশন ২০৪১ অর্জনে বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বাড়ানো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার বাড়ানো, সবুজায়ন বাড়ানো, সর্বোপরি বেসরকারি খাত বান্ধব নীতিমালা প্রণয়ন অপরিহার্য।

 

এ ছাড়া কর্মশালায় প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন ফরেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ফিকি) সভাপতি জাভেদ আক্তার, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি কামরান টি রহমান রহমান প্রমুখ।

 

কর্মশালায় এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী, সহসভাপতি মো. মুনির হোসেন, পরিচালকরা, বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ী নেতারা এবং সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
 

শেয়ার করুন