সাড়ে ৫ ঘণ্টা ধরে শাহবাগ অবরোধ শহীদ পরিবারের সদস্যদের, মানুষের ভোগান্তি চরমে
সিএইচটি টিভি ডেস্ক
  • প্রকাশিত : 06-02-2025
ফাইল ছবি : সংগৃহীত

প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা ধরে রাজধানীর শাহবাগ অবরোধ করে রেখেছেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের স্বজনেরা। ফলে শাহবাগ ও এর আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট তৈরি হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রী, রোগীসহ এই পথে চলাচলকারীরা।

অভ্যুত্থানের প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচারের লক্ষ্যে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার, শহীদ ও আহত ভাইদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়াসহ পাঁচ দফা দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে শাহবাগ অবরোধ করেন শহীদ পরিবারের স্বজনেরা। তাঁরা আজই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ চাইছেন।

 

 

ফলে শাহবাগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও বারডেম জেনারেল হাসপাতাল থাকায় রোগী ও তাঁর স্বজনেরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। রাজধানীর মিরপুর–১ নম্বর থেকে শাহবাগের বারডেম জেনারেল হাসপাতালে পায়ে সমস্যায় ভোগা একজন রোগীকে নিয়ে আসেন মো. সোহেল রানা। কারওয়ান বাজার পার হওয়ার পর তাঁরা তীব্র যানজটে পড়েন তাঁরা। এক ঘণ্টার মতো সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বসে ছিলেন তাঁরা। এরপর রোগীকে কোলে করে নিয়ে শাহবাগের উদ্দেশে রওনা দেন সোহেল। যখন বারডেম হাসপাতালের সামনে আসেন, তখন ঘেমে একাকার তিনি।

শাহবাগ মোড় অবরোধের কারণে আশপাশের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে

শাহবাগ মোড় অবরোধের কারণে আশপাশের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে

ধানমন্ডির আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গতকাল বুধবার এসেছিলেন নাসিমা বেগম ও তাঁর মেয়ে মোছা. পপি। সঙ্গে পপির ৮ বছর বয়সী ছেলেসন্তান ও ১৪ মাস বয়সী মেয়েসন্তানও ছিল।

বরিশাল থেকে এসে গতকাল তাঁরা চিকিৎসা করিয়েছেন। পরে রাতে একটি হোটেলে ছিলেন। আজ দুপুরে তাঁরা বরিশালের গ্রামের বাড়ি চলে যাচ্ছিলেন। লঞ্চে করে তাঁরা যাবেন। সে কারণে ধানমন্ডি থেকে সদরঘাট যাওয়ার জন্য একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় নেন তাঁরা। কিন্তু শাহবাগে এসে অটোরিকশা আটকা পড়ে।

 

নাসিমা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বসে আছেন, যেতে পারছেন না। তাঁরা দুপুরে খাওয়াদাওয়া করেননি। ভেবেছিলেন সদরঘাট গিয়ে খাবেন, সেটাও হচ্ছে না। এদিকে ১৪ মাস বয়সী তাঁর নাতনি গরমে ঘামছে, কাঁদছে। সিএনজিচালক মো. হাসান মিয়া জানান, অটোরিকশা নিয়ে এখন সামনে এগোতেও পারছেন না, আবার পিছিয়েও যেতে পারছেন না।

শাহবাগ অবরোধের কারণে দুর্ভোগ পড়েছেন সাধারণ মানুষ। ঢাকা, ৬ ফেব্রুয়ারি

শাহবাগ অবরোধের কারণে দুর্ভোগ পড়েছেন সাধারণ মানুষ। ঢাকা, ৬ ফেব্রুয়ারি

ভূলতা, গাউছিয়া, কলাবাগান রুটে চলাচলকারী মেঘলা পরিবহনের একটি বাস বেলা ১১টা থেকে আটকা শাহবাগে। সেই বাসের চালক মো. সাইদুল আজ বেলা ৩টা ২০ মিনিটে প্রথম আলোকে বলেন, ৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে এক জায়গায় বসে আছেন। সব যাত্রী নেমে চলে গেছে। হঠাৎ ভাঙচুরের ভয়ে বাস রেখে দুপুরের খাবার খেতেও যেতে পারছেন না।

শহীদ পরিবারের দ্রুত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করাসহ পাঁচ দফা দাবি এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের দাবিতে আজ বেলা সোয়া ১১টা থেকে শাহবাগ অবরোধ করে রেখেছেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা।

বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এস এন মো. নজরুল ইসলাম আন্দোলনকারীদের জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা আগামী রোববার শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বসবেন। তাঁরা যেন অবরোধ তুলে নেন। তবে শহীদ পরিবারের সদস্যরা তা মানেননি। তাঁরা বলেছেন, আজই তাঁরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান। বিকেল পাঁচটায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলছিল।

শেয়ার করুন