বাংলাদেশ ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত (রিজার্ভ) আবার কমে গেছে। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি বিল পরিশোধের পর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসাবপদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঘরে নেমে এসেছে। আজ বুধবার আমদানি দায় সমন্বয় করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, আইএমএফ স্বীকৃত বিপিএম-৬ পদ্ধতি অনুযায়ী ৪ জুলাই রিজার্ভের স্থিতি ছিল ২১ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন বা ২ হাজার ১৭৮ কোটি ডলার। আকুতে আমদানি দায় শোধের পর তা কমে ২০ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৪৬ কোটি ডলারে নেমে এসেছে। তবে প্রকৃত রিজার্ভ আরও ৬ বিলিয়ন বা ৬০০ কোটি ডলার কম।
৪ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব হিসাবে মোট রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ৮১ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৬৮১ কোটি ডলার, যা থেকে আকুতে আমদানি দায় শোধ করা হয়। এরপর রিজার্ভ কমে হয়েছে ২৬ দশমিক ১৭ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৬১৭ কোটি ডলার।
এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন বা আকু হলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর মধ্যকার একটি আন্ত–আঞ্চলিক লেনদেন নিষ্পত্তিব্যবস্থা। এর মাধ্যমে এশিয়ার ৯টি দেশের মধ্যে যেসব আমদানি-রপ্তানি হয়, তা প্রতি দুই মাস পরপর নিষ্পত্তি হয়। তবে অন্য দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের লেনদেন তাৎক্ষণিকভাবে সম্পন্ন হয়। আকুর সদস্যদেশগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত, ইরান, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, ভুটান ও মালদ্বীপ। দেনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ার কারণে সম্প্রতি এ তালিকা থেকে বাদ পড়েছে শ্রীলঙ্কা।
আকুর সদস্যদেশগুলোর মধ্যে ভারত পরিশোধ করা অর্থের তুলনায় অন্য দেশগুলো থেকে বেশি পরিমাণে ডলার আয় করে। বেশির ভাগ দেশকে আয়ের তুলনায় অতিরিক্ত ডলার খরচ করতে হয়। ব্যাংকগুলো এই আমদানি খরচ নিয়মিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দেয়, যাতে রিজার্ভ বাড়ে। পরে তা থেকে আকুর বিল শোধ দেওয়া হয়।
জাতিসংঘের এশিয়া অঞ্চলের অর্থনীতি ও সামাজিক কমিশনের উদ্যোগে ১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় আকু। জাতিসংঘের এশিয়া অঞ্চলের অর্থনীতি ও সামাজিক কমিশনের ভৌগোলিক সীমারেখায় অবস্থিত সব দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জন্য আকুর সদস্য পদ উন্মুক্ত। এর সদর দপ্তর ইরানের রাজধানী তেহরানে।