ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রথম শ্রেণিতে ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে দেওয়া হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ দেননি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে করা পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ‘নো অর্ডার’ দিয়েছেন। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম আজ রোববার এ আদেশ দেন।
বয়সসীমা লঙ্ঘিত হওয়ায় ভিকারুননিসার ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে গত মঙ্গলবার রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে ১৬৯ শিক্ষার্থীর শূন্য আসনে ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি নিতে স্কুল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
ভর্তিপ্রক্রিয়া নিয়ে ভর্তি–ইচ্ছুক দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবকের করা এবং ভর্তি বাতিলের বৈধতা নিয়ে ১২০ শিক্ষার্থীর অভিভাবকের করা পৃথক দুটি রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে এ রায় দেওয়া হয়। দুই অভিভাবকের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে দেওয়া রুল যথাযথ (অ্যাবসলিউট) ঘোষণা করা হয়। ১২০ অভিভাবকের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে দেওয়া রুল খারিজ (ডিসচার্জ) করা হয়।
হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে ভর্তি বাতিল শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা পৃথক আবেদন করেন, যা আজ চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। আদালতে তাঁদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান। দুই অভিভাবকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শামীম সরদার।
শামীম সরদার প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে ভর্তি বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা পৃথক দুটি আবেদন করেন। চেম্বার আদালত স্থগিতাদেশ দেননি। নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলেছেন। ফলে হাইকোর্টের রায় ও ১৬৯ শিক্ষার্থীর শূন্য আসনে অপেক্ষামাণ তালিকা থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি নিতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ আপাতত বহাল থাকছে।
নির্দিষ্ট বয়সসীমার বাইরে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে লটারিতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী ভর্তির অভিযোগে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি–ইচ্ছুক দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবক প্রথমে একটি রিট করেন। এর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ২৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় প্রথম শ্রেণিতে বিধিবহির্ভূতভাবে ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করতে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি এক স্মারকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) নির্দেশনা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম শ্রেণির ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাতিল করার বিষয়টি জানিয়ে মাউশিতে ৪ মার্চ চিঠি পাঠায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি।
ভর্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত ও ভর্তি বাতিলের বৈধতা নিয়ে ভর্তি বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীদের ১২০ জন অভিভাবক আরেকটি রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২৫ মার্চ হাইকোর্ট রুল দেন। পৃথক রুলের ওপর একসঙ্গে শুনানি শেষে গত মঙ্গলবার রায় দেন হাইকোর্ট।