অজ্ঞাতপরিচয় দুটি লাশ পড়ে ছিল ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ির সামনে। পুরোনো ছাপা ছিটকাপড় দিয়ে ঢাকা লাশ দুটি ঘিরে বেশ কিছু কৌতূহলী মানুষ। পাশেই ধানমন্ডি লেকের কিনার ঘেঁষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ও পুষ্পস্তবক রাখার বিধ্বস্ত বেদি। সড়কের অপর পাশে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক বাড়ির ভাঙা ফটক দিয়ে প্রবেশ করছে শত শত মানুষ। আগুনে পুড়ে গেছে তিনতলা বাড়িটি। আজ মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে গিয়ে এই চিত্র দেখা গেছে।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে এই ঐতিহাসিক বাড়ির রয়েছে নিবিড় সংযোগ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর এই বাসভবন থেকে মুক্তিযুদ্ধের আগের দিনগুলোতে দিকনির্দেশনা দিতেন। হাজার হাজার মুক্তিপাগল মানুষ আসত তাঁর মুখ থেকে আন্দোলনের পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে জানতে।
মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যেই এক মর্মান্তিক হত্যাযজ্ঞ ঘটেছিল এই বাড়িতে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু, তাঁর স্ত্রী–পুত্র, পুত্রবধূসহ আত্মীয়দের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল এখানে। ৪৯ বছর পর সেই একই আগস্ট মাসে আবার এক নির্মমতা–কবলিত হলো বাড়িটি। গতকাল সোমবার বিকেলে বিক্ষুব্ধ মানুষ এই বাড়িতে হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে।
বঙ্গবন্ধুর এই বাড়িটিকে স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছিল। মূল বাড়িটি তিনতলা। হত্যাকাণ্ডের সময় যে অবস্থা ছিল, যত দূর সম্ভব অবিকল সেই অবস্থায় বাড়ি, আসবাব, গুলি চিহ্নিত দেয়ালগুলো, বঙ্গবন্ধুর ব্যবহৃত জিনিসপত্র সব সংরক্ষণ করে বাড়িটিকে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছিল ১৯৯৪ সালে। পরে মূল বাড়ির পেছনে একটি নতুন ভবন করে সেখানে পাঠাগার, গবেষণা কেন্দ্র ও সেমিনার কক্ষ তৈরি করা হয়েছিল।