সংস্কার কমিশনগুলোর দেওয়া সুপারিশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের আলোচনা শুরু হবে ফেব্রুয়ারি মাসে। আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এ তথ্য জানান। এ সময় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চার সংস্কার কমিশনের প্রধান ও অন্য সদস্যরা রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন। এই চার সংস্কার কমিশন হলো সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশ সংস্কার কমিশন। এ বিষয়েই সংবাদ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, কমিশনগুলোতে সমন্বয়সহ আনুষঙ্গিক কাজের জন্য এক মাস সময় দেওয়া হয়েছে। তবে জানুয়ারির মধ্যেই এই চার কমিশনসহ মোট ছয়টি সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন এ মাসের মধ্যে জানিয়ে দেওয়া হবে। বাকি দুটি কমিশন হলো বিচার বিভাগ সংস্কার ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন।
সরকারের পক্ষ থেকে আগেই বলা হয়েছে, সংস্কার কমিশনগুলোর প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রস্তাবগুলো নিয়ে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে। আলোচনার মধ্য দিয়ে যেসব প্রস্তাব নিয়ে ঐকমত্য তৈরি হবে, সেগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। প্রস্তাবগুলো কবে কোন প্রক্রিয়ায় বাস্তবায়ন করা হবে, তার একটি রূপরেখা আসতে পারে দলগুলোর সঙ্গে সরকারের আলোচনার মাধ্যমে।
সাংবাদিকেরা জানতে চেয়েছিলেন, সুপারিশগুলো নিয়ে কবে নাগাদ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু হবে। জবাবে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘যেহেতু কমিশনপ্রধানরা এক মাস সময় চেয়ে নিয়েছেন। তাঁরা নিজেরা বসে প্রাধান্যগুলো ঠিক করবেন। আমার ধারণা, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে হয়তো আলোচনা শুরু করা যাবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে একধরনের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। তারা তাদের লিখিত মতামত দিয়েছে।’
এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল আরেকটু যোগ করে বলেন, কমিশন যদি কাজ আগে শেষ করতে পারে, তাহলে হয়তো ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে শুরু হতে পারে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের কথা বলছে। এর অংশ হিসেবে দুই ধাপে মোট ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। এর মধ্যে গত অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে গঠন করা হয় নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন ও সংবিধান সংস্কার কমিশন। এর মধ্যে বিচার বিভাগ সংস্কার ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় বাড়ানো হয়েছে। বাকি চারটি কমিশনের প্রতিবেদন আজ জমা দেওয়া হলো।