রাঙামাটিতে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তথাকথিত ধর্ষণ মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ার পর আদালতে আদেশে বিবাদী কর্তৃক দায়েরকৃত ১৭ ধারার মামলায় ধর্ষন মামলার বাদি ও ভিকটিমকে গ্রেফতার করেছে র্যাব পুলিশের যৌথ দল। গ্রেফতারকৃতরা হলেন নাসির উদ্দিন হাওলাদার ও তার কন্যা নাসরিন আকতার। এই পিতা-কন্যা পরস্পর যোগসাজসে রাঙামাটির বরকলের ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ মামুনের বিরুদ্ধে বিগত ২৪/০৬/২০২০ইং তারিখে বরকল থানায় জনৈক মোঃ নাসির হাওলাদার নামক একজন ব্যক্তি তার মেয়েকে জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগ এনে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০/(সংশোধিত ২০০৩)এর ৯(১) ধারায় তথাকথিত ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছিলো।
এই মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান মামুন উক্ত মামলায় বিচারকার্য চলাকালীন সময়ে গ্রেফতার হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মামুন ২৯ দিন জেল হাজতেও ছিলেন। মামুনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত জোরপূর্বক ধর্ষণ মামলায় উল্লেখ করা হয়েছিলো মামুন কর্তৃক উক্ত নাসরিন আকতার ধর্ষণের শিকার হয়ে গর্ভবতী হয়ে সন্তান প্রসব করেছিলেন। উক্ত সন্তানের পিতৃত্বও দাবি করা হয়েছিলো মামুনের কাছে।
সেসময় এই ঘটনা রাঙামাটির টক অব দ্যা ডিস্ট্রিক এ পরিণত হয়েছিলো। দীর্ঘ তিন বছর ২ মাস মামলার কার্যক্রম চলাকালীন সময়ে রাঙামাটিস্থ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারকের নির্দেশনায় ভিকটিম তার সন্তান ও মামুনের ডিএনএ পরীক্ষা তিনবার, থানা, সার্কেল এসপি, পিবিআই ও সিআইডি কর্তৃক মোট চারবার তদন্ত করা হয়।
সকল প্রকার পরীক্ষা-নীরিক্ষা ও তদন্তে ভূষণছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের কোনো সত্যতা না পাওয়ায় চলতি বছরের ২৩শে মে রাঙামাটিস্থ নারী-শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল মামুনকে বেকসুর খালাস প্রদান করে এই মামলা দায়েরকারী বাদি ও ভিকটিমের বিরুদ্ধে ১৭ ধারায় মামলা দায়েরের আদেশ প্রদান করেন। এই আদেশের প্রেক্ষিতে চলতি নভেম্বর মাসের ২ তারিখে ইউপি চেয়ারম্যান মামুন বাদি হয়ে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা ধর্ষণ মামলার বাদি নাসির উদ্দিন ও তার কন্যা তথাকথিত ভিকটিম নাসরিন আক্তারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দায়েরের বিরুদ্ধে ১৭ ধারায় অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন।
এই মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত উক্ত প্রতারক পিতা-কন্যার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ প্রদান করেন। এরপরপরই পিতা-কন্যা পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে প্রযুক্তির সহযোগিতায় আসামীদের অবস্থান নিশ্চিত করে র্যাব-৭ এর সহযোগিতা নিয়ে আসামীদের গ্রেফতার করে বরকল থানা পুলিশ।
উক্ত গ্রেফতার অভিযানে থাকা বরকল থানার এএসআই জহিরুল ইসলাম পিতা-কন্যাকে গ্রেফতারের বিষয়টি প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আমরা আসামীদের গ্রেফতার করে রাঙামাটির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছি। এই মামলার কারনে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলেন ভূষণছড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মামুনুর রশিদ মামুন। বিষয়টি নিয়ে সেসময় নানান রকম মুখরোচক কাহিনী নির্ভর খবরও প্রকাশ করা হয়েছিলো বিভিন্ন মাধ্যমে।
ইউপি চেয়ারম্যান মো: মামুনর রশিদ মামুন জানান, মহান আল্লাহর রহমতে সত্যের জয় হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে আমাকে ব্যাপকভাবে হেয় প্রতিপন্ন ও হয়রানী করা হয়েছে। আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে সম্পূর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে আমার বিরুদ্ধে সকল প্রকার অপপ্রচার চালিয়ে আমাকে ও আমার পরিবারকে সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করা হয়ে।
বিষয়টি মাননীয় আদালত নিজেও অনুধাবন করতে পেরেছেন যার প্রেক্ষিতে আদালতই আমাকে উক্ত প্রতারক পিতা-কন্যার বিরুদ্ধে ১৭ ধারায় মামলার আদেশ প্রদান করেছিলেন। তারই আলোকে দায়েরকৃত মামলায় আসামীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। আমি র্যাব-৭ ও বরকল থানাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আশা করছি মহাণ আল্লাহর রহমতে আমি ন্যায় বিচার পাবো।