প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা’র বিশেষ উদ্যোগ “ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ” অঙ্গীকার বাস্তবায়নে কাজ করছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা। তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড তিন পার্বত্য জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় বিনামূল্যে সোলার হোম সিস্টেম বিতরণ করছে। তিনি পশ্চাৎপদ দুর্গম এলাকায় বসবাসরত পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীদের বিনামূল্যে সোলার বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানান। রবিবার (২৯ জানুয়ারী) সকাল ১১টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের রাঙ্গামাটিস্থ প্রধান কার্যালয়ের বোর্ড কক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ‘পরিচালনা বোর্ড’ এর ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে ২য় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী, বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আলম চৌধুরী (অতিরিক্ত সচিব), পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, এনডিসি (যুগ্মসচিব); ইফতেখার আহমেদ (যুগ্মসচিব) সদস্য প্রশাসন, রাঙ্গামাটির পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, বান্দরবান পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক মোঃ সহিদুজ্জামান, সদস্য বাস্তবায়ন মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ (উপসচিব), সদস্য পরিকল্পনা মোঃ জসীম উদ্দিন (উপসচিব), বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য কাঞ্চন জয় তঞ্চঙ্গ্যা উপস্থিত ছিলেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা আরও কলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম তুলা উৎপাদনের জায়গা হিসেবে একসময় কার্পাস মহলে নামে খ্যাতি ছিলো। সেই কার্পাস মহল কালের বিবর্তনে ও যথাযথ উদ্যোগের অভাবে তুলা উৎপাদন কমে যাচ্ছে। সেই ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য এবং কার্পাস মহল খ্যাত পার্বত্য চট্টগ্রামকে পুনরায় তুলা চাষের আওতায় আনয়নের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড তুলা চাষ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে এবং ইতোমধ্যে চাষীদের মাঝে তুলা চাষে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসকগণ পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের উন্নয়ন কার্যক্রম সরাসরি জনসম্পৃক্ততা ও উন্নয়নমূলক কাজের দৃশ্যমান হওয়ায় ভূয়সী প্রশংসাসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প কাজের গুণগতমান সস্তোষজনক হওয়ায় বোর্ডের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এছাড়া জেলা প্রশাসকগণ মূলধারায় সম্পৃক্ততা আনয়নের লক্ষ্যে দুর্গম এলাকায় শিক্ষা সম্প্রসারণ, হোস্টেল নির্মাণ ও সংস্কার, যুব সমাজকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন এবং দেশের খাদ্য উৎপাদনে কৃষি সম্প্রসারণ সংক্রান্ত প্রকল্প গ্রহণের বিষয়ে প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, খাগড়াছড়ি ইউনিট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মুজিবুল আলম, বোর্ডের উপ-পরিচালক মংছেনলাইন রাখাইন, নির্বাহী প্রকৌশলী জনাব আবু বিন মোহাম্মদ ইয়াছির আরাফাত, সিএমইউ জেনারেল ম্যানেজার জনাব পিন্টু চাকমা, হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা জনাব কল্যানময় চাকমা, টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক জনাব মোহাম্মদ এয়াছিনুল হক, রাঙ্গামাটি নির্বাহী প্রকৌশলী জনাব তুষিত চাকমা, গবেষণা কর্মকর্তা জনাব কাইংওয়াই ম্রো, মিজ্ ডজী ত্রিপুরা তথ্য অফিসার, জনাব সাগর পাল, সহকারী পরিচালক (চ:দা) সহ বোর্ডের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভার আলোচ্য সূচি ছিলো (১) গত ২৯/০৯/২০২২ তারিখে অনুষ্ঠিত বোর্ড সভার কার্যবিবরণী পাঠ ও অনুমোদন এবং গৃহীত সিদ্ধান্তের অগ্রগতি পর্যালোচনা; (২) ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পসমূহের ২০ জানুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত সময়ের অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং (৩০) বিবিধ।
এসময় সভায় সভাপতির অনুমতিক্রমে সদস্য প্রশাসন ইফতেখার আহমেদ (যুগ্মসচিব) বিগত পরিচালনা বোর্ড বিগত সভার কার্যবিবরণী পাঠ ও গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতি বিস্তারিত উপস্থাপন করেন।
অতঃপর পর্যাক্রমে বোর্ডের আওতাধীন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকগণ ও নির্বাহী প্রকৌশলীগণ কোড নং ২২০০১১০০, ২২০০০৯০০ এর আওতাধীন প্রকল্প/স্কিম এবং বোর্ডের আওতাধীন পরিকল্পনা কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকগণ ২০ জানুয়ারি ২০২৩খ্রি. পর্যন্ত সময়ে সার্বিক বাস্তবায়নের অগ্রগতি বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন। এসময় তিন পার্বত্য জেলার হেডম্যান কার্যালয়ের নকশা প্রস্তুতকরণ অগ্রগতি, পরিকল্পনা কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি, তিন পার্বত্য জেলায় সোলার হোম সিস্টেম বিতরণ বাস্তবায়ন অগ্রগতি, আইসিটি প্রকল্প, সূর্যমুখী প্রকল্প, ভুট্টা চাষ প্রকল্প, পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন, রুমা-রোয়াংছড়ি প্রকল্প, সোনাখালের উপর পিসি গার্ডার ব্রীজ নির্মাণ, তুলা চাষ প্রকল্প, ইক্ষু চাষ প্রকল্প, পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্পের অগ্রগতি এবং কফি ও কাজুবাদাম চাষ প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।