রাঙামাটি মেডিকেল কলেজে শহীদ মনির হোসেনের নামে হল করার দাবি পিসিসিপি'র
সিএইচটি টিভি ডেস্ক
  • প্রকাশিত : 11-01-2023
ফাইল ছবি : সংগৃহীত

রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শহীদ মনির হোসেনের নামে মেডিকেল কলেজে একটি হল নামকরণ ও তার পরিবারকে পুর্নবাসন করার দাবীতে মানববন্ধন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখা।
বুধবার দুপুরে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের সামনে এই মানববন্ধন করা হয়।

এতে বক্তারা বলেন, ২০১৫ সালের ১০ জানুয়ারী রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ চালুর আনন্দ শোভাযাত্রায় পার্বত্য চট্টগ্রামের উগ্রবাদী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএসের সন্ত্রাসী হামলায় নির্মমভাবে খুন হয় মনির হোসেন। তার আত্মত্যাগের বিনিময়ে রাঙামাটিতে মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ বছরেও সে হত্যার বিচার হয়নি। তার সে অবদানের কথা আজ কারো মনে নেই।

মনিরের পরিবারকেও দেওয়া হয়নি সরকারের পক্ষ থেকে কোন সুযোগ সুবিধা। তাই মনিরের অবদানকে স্মরনিয় করে রাখার জন্য মেডিকেল কলেজের ছাত্রবাসকে শহীদ মনিরের নামে নামকরণ করাসহ তার পরিবারকে সরকারি চাকরি দেওয়া ও পুনর্বাসন করার দাবি জানান।

মানববন্ধনে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি জেলা সভাপতি মো: হাবীব আজম এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সোলায়মান। আরো বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি কাজী মোহাম্মদ জালোয়া, প্রচার সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি সরকারি কলেজ শাখার নেতা মো: শহীদুল ইসলাম, পাবলিক কলেজের ছাত্র নেতা মো: পারভেজ প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তরা বলেন, ২০১৫ সালের ১০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। 


সেদিনটি রাঙামাটিবাসীর জন্য যেমন আনন্দদায়ক ছিল, তেমনি দিনটি ছিল সমানভাবে বিভিষিকাময়। একদিকে মেডিকেল কলেজের উদ্বোধন চলছিল অন্যদিকে রাঙামাটি শহরের বনরূপা থেকে জেলা পরিষদ পর্যন্ত স্থানটি ছিল উপজাতীয় উগ্রবাদি সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএস ও তাদের ছাত্র সংগঠন পিসিপি'র সন্ত্রাসীদের হিস্রতা আর উন্মত্ততার বিভিষিকাময় কেন্দ্র। সেদিন হিস্রতার বেড়াজালে তরুন যুবক মনিরের একটি তাজা প্রাণ ঝরে যায়, আহত হয় জামাল হোসেন সহ অসংখ্য সাধারণ মানুষ। হিংসা হানাহানির রেশ ধরে পরিস্থিতি সামাল দিতে রাঙামাটি জেলার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শহরে কারফিউ জারি করা হয়। তিনদিন রাঙামাটি শহর ছিল নিরব নিস্তব্ধ এবং মৃত্যুপুরির মতো। মানুষ মেডিকেল কলেজ পাওয়ার সাথে সাথে কারফিউ দেখারও অভিজ্ঞতা অর্জন করে।

এই ইতিহাস একদিন মানুষ ভুলে যাবে। ইতোমধ্যে অনেকই ভুলেও গেছেন। কিন্তু রাঙামাটি মেডিকেল কালেজের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এবং থাকবে। সেদিন থেকেই দাবি উঠেছিলো রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের ক্যাম্পাস অথবা হলরুম যেকোন একটি মরহুম মনিরের নামে করা হোক। কিন্তু সেই দাবি উপেক্ষিত করা হয়েছে।

বক্তারা আরো বলেন, অপার সম্ভাবনাময়ী পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষা বিস্তারের কর্মসূচি বাংলাদেশ সরকার যখনই হাতে নেয় তখনই এই জেএসএস (সন্তু) সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এই বাধা শুধু শিক্ষার ক্ষেত্রে নয়। সড়ক যোগাযোগ, পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও সামাজিক অগ্রগতি সব ক্ষেত্রেই বাধা দান করে এই উগ্র উপজাতীয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী।
একই সময়ে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায়ও জেএসএস (সন্তু) সন্ত্রাসীরা বাঁধা সৃষ্টি করেছিলো, তারা তাদের ছাত্র সংগঠন পিসিপিকে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হতে সেসময়ে তারা শিক্ষার্থীদের ও অভিভাবকদের হুমকি দিয়েছিলো, পার্বত্য অঞ্চলের মানুষকে আধুনিকতা ও শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত করে তাদের দমিয়ে রেখে চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তার করে ত্রাস সৃষ্টি করে রাখাই এদের মূল উদ্দেশ্য।
মানববন্ধনে শহীদ মনিরের স্বরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। 
আজকের মানববন্ধন থেকে আগামীকাল সকালে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক কার্যলয়ের সামনে নানিয়ারচর সেতুর নামকরণ পরিবর্তনের উপর মানববন্ধনের ও ডাক দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ ।

শেয়ার করুন