বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারন করে তারই তনয়া জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের রাজনীতি করে না চাইতেই দল থেকে অনেক কিছু পেয়েছেন জানিয়ে দলের নৌকা প্রতিকের বিরুদ্ধে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে অংশ নেবেন না বলে জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও রাঙামাটি জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি নিখিল কুমার চাকমা। দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নিবেন কিনা? বুধবার সন্ধ্যায় প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নিখিল কুমার চাকমা নিজেই।
এরআগে ২৯৯নং আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন নিখিল কুমার চাকমা। ৩০ নভেম্বর মনোনয়ন ফরম জমাদানের শেষ দিন। মনোনয়ন ফরম জমা দিবেন নিখিল কুমার এমন প্রচারনা উঠলে বিষয়টি নিয়ে তার বক্তব্য জানতে চাইলে বুধবার নিজ বাসায় নিজেই স্পষ্ট করে জানালেন, দল ও দলীয় প্রতিকের প্রতি আনুগত্য রেখেই তিনি মনোনয়ন ফরম জমা দিবেন না।
এর আগে নিখিল কুমার চাকমার মনোনয়ন জমা নিয়ে রাঙামাটিতে নানান জল্পনা চলছিল। বুধবার গুজব ছড়ানো হয়েছিল নিখিল কুমার চাকমা মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। এ নিয়ে মানুষের কৌতুহল জন্মে। কারণ নিখিল কুমার চাকমা আওয়ামীলীগের একজন হেভিওয়েট প্রার্থী ছিলেন।
তিনি রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান থাকার সুবাধে রাঙামাটির তৃণমুল পর্যায়ে তাঁর অসংখ্য সমর্থক সৃষ্টি হয়েছিল।
নিখিল কুমার চাকমা বলেন, জননেত্রী বঙ্গবন্ধুর কন্যা আমাকে দুবার সুযোগ দিয়েছেন। তাঁর স্বাক্ষরে আমি রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হয়েছি। তাঁর স্বাক্ষরে আমি উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান হয়েছি। এবারের নির্বাচনে আমি নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন চেয়েছি। বঙ্গবন্ধু কন্যা আমাকে মনোনয়ন দেননি। এতে আমার কোন দু:খ নেই। আমি প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা করছি। তাঁর সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধা করে আমি নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করবো সেই প্রস্তুতি আমি নিয়ে রেখেছি।
আলাপকালে নিখিল কুমার বলেন, আমার অনেক সমর্থক আমাকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন। কিন্তু আমি একজন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হয়ে কখনো নৌকা প্রতীকের বিপক্ষে অবস্থান নিতে পারি না। আমি জননেত্রীর কথা মেনে চলব।
এক প্রশ্নের জবাবে নিখিল কুমার চাকমা বলেন, দীপংকর তালুকদার যদি মনে করেন তাঁর নির্বাচনে আমার প্রয়োজন আছে আমি অবশ্যই তাঁর পক্ষে কাজ করব। যদি মনে করেন তাঁর নির্বাচনী প্রচারণায় আমি উপস্থিত থাকলে তাঁর ক্ষতি হবে তখন আমি আমার মত করে থাকব। আমি চাই নৌকার জয় হোক।
প্রসঙ্গত আসন্ন সংসদ নির্বাচনে রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগ থেকে শুধুমাত্র দীপংকর তালুকদার একক প্রার্থী হবার কথা থাকলেও তফসিল ঘোষণার পর ১১ জন প্রার্থী মনোনয়ন চান। পরে বর্তমান এমপি দীপংকর তালুকদারকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়। এ পর্যন্ত রাঙামাটি আসন থেকে ছয়জন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন বলে জানাগেছে। এদের মধ্যে দীপংকর তালুকদার, নিখিল কুমার চাকমা, জেএসএসের উষাতন তালুকদার, তৃণমুল বিএনপির হাফেজ মিজানুর রহমান, জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতিকে হারুনুর রশিদ মাতব্বর ও বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টি(বিএসপি) একতারা প্রতিকের স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন আমীর হামজা। তিনি রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলাধীন আমতলীর বাসিন্দা বলে জানগেছে।
এদের মধ্যে উষাতন তালুকদার এবং হাফেজ মিজানুর রহমান মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। ৩০ নভেম্বর দীপংকর তালুকদারসহ বাকিরা মনোনয়ন ফরম জমা দিবেন বলে জানাগেছে।