দীর্ঘ কয়েকমাস ধরে গহীন পাহাড়ে অভিযান পরিচালনা করে আসছে র্যাব। সম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রামের সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার তিন বছর মেয়াদি চুক্তি হয়। চুক্তি অনুসারে অর্থের বিনিময়ে দুর্গম পাহাড়ে কেএনএফ জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দিত বলে এমন তথ্য ও পায় র্যাব।
এরই ধারাবাহিকতায় বান্দরবানের থানচি ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় পাহাড়ি অঞ্চলে র্যাব-৭ ও ১৫-এর যৌথ অভিযানে চালিয়ে জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বৃহষ্পতিবার ( ১২ জানুয়ারি) সকালে জেলা পরিষদ কনফারেন্স হল রুমে সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম উইংয়ের কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার নিজামউদ্দীন উদ্দীন হিরন ওরফে ইউসুফ (৩০), সালেহা আহমদ ওরফে সাইহা (২৭), সাদিকুর রহমান সুমন ওরফে ফারকুন (৩০), বাইজিদ ইসলাম ওরফে মুয়াজ (২১), ইমরান বিন রহমান শিথিল (১৭)।
তিনি জানান, সম্প্রতি জঙ্গিবাদে জড়িয়ে নতুন করে কথিত হিজরতের নামে ঘরছাড়া তরুণরা জামাতুল আনসারের হয়ে পাহাড়ি এলাকার আস্তানায় আশ্রয় নেয়। এসব আস্তানায় হিজরত করা তরুণদের ভারি অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সম্প্রতি উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বেচ্ছায় হিজরতের নামে বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হওয়া ১৯ জেলার ৫৫ তরুণের তালিকা প্রকাশ করে র্যাব। তাদের মধ্যে ৩৮ জনের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা প্রকাশ করা হয়।
ভারত ও মিয়ানমারের সীমান্তঘেঁষা দুর্গম পাহাড়ে বাড়িছাড়া কিছু তরুণ জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। নতুন এ জঙ্গি সংগঠনকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ‘কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট’ (কেএনএফ) নামে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী। কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরে টানা অভিযান চালিয়ে বান্দরবান ও রাঙ্গামাটির বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র পাঁচজন জনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের পর্যালোচনা করে র্যাব নিশ্চিত হয় যে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার বিপুল সংখ্যক সদস্য পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম পাহাড়ি জঙ্গলে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার আল মঈন বলেন,‘অভিযানে পার্বত্য এলাকায় আরও কয়েকটি জঙ্গি-সন্ত্রাসী আস্তানা থাকতে পারে। এ ছাড়া জঙ্গি সংগঠনটির আরও অন্তত ৫০ সদস্য বিভিন্ন আস্তানায় অবস্থান নিয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন বলে র্যাব মনে করছে। তবে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।