ফের রক্তাক্ত বান্দরবান। রোয়াংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের খামতাংপাড়া এলাকায় একসঙ্গে পড়ল ৮টি লাশ। গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গেছে তাদের বুক। অচেনা হয়ে গেছে তাদের অনেকের মুখ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দাবি, পাহাড়ের দুই বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ও ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক) মধ্যে গোলাগুলিতে এবার রক্তাক্ত হয়েছে পাহাড়। তবে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিকের দায়িত্বশীলরা বলছেন, কেএনএফের অভ্যন্তরীণ কোন্দলেই লাশ পড়েছে।
নিহতদের মধ্যে সাতজনের পরিচয় মিলেছে। তাদের নিজেদের কর্মী বলে স্বীকার করেছে কেএনএফ। এদিকে একসঙ্গে ৮টি লাশ পড়ার ঘটনায় পাহাড়ে বিরাজ করছে আতঙ্ক। জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। জাতীয় নির্বাচনের আগে এমন সশস্ত্র মহড়া জাগাচ্ছে নতুন শঙ্কাও। তবে হামলার ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি। গঠন করা হয়নি তদন্ত কমিটি।
বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘পাহাড়ের দুই বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে গুলির শব্দ পাওয়া যায়। এর পরদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।’ কারা এ সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ী– এমন প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি তিনি।
রোয়াংছড়ির ইউএনও খোরশেদ আলম চৌধুরী বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে কেএনএফের দুই গ্রুপের গোলাগুলিতে আটজন নিহত হয়েছে। ঘটনার পর সেখানে লাশ উদ্ধারের জন্য সেনাবাহিনীর সদস্য ও পুলিশ পাঠানো হয়। রোয়াংছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি চহাইমং মার্মা বলেন, ‘কুকি-চিনের সঙ্গে গোলাগুলিতে আটজন মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি। কুকি-চিনের সঙ্গে কাদের মারামারি হয়েছে, তা আমার জানা নেই।’
রোয়াংছড়ি থানার ওসি আবদুল মান্নান বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাদের প্রকৃত নাম-পরিচয় জানার জন্য কাজ করছে পুলিশ। তারা কীভাবে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেল, সেটিও খুঁজে দেখা হবে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।