বান্দরবানের লামা উপজেলার ৫৬৫টি পাড়ার মধ্যে ২৭২টি পাড়ায় ২০১৯ সাল থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত ৫ হাজার ৫৭৩ জন নারী পুরুষ ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ২০২১ সালে উপজেলার সরই ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি পুইট্ট্যাঝিরি পাড়ার এক নারী এ রোগে আক্রান্ত হয়ে লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচীর আওতায় উপজেলা পর্যায়ে মাল্টি ষ্টেক হোল্ডারদের নিয়ে আয়োজিত এক সমন্বয় সভায় এ তথ্য উপস্থাপন করেন, ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচীর প্রজেক্ট ম্যানেজার আবুল কালাম।
আজ ২৯ জুন (বুধবার) দুপুরে উপজেলা পরিষদ সভা কক্ষে নির্বাহী অফিসার মোঃ মোস্তফা জাবেদ কায়সারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তফা জামাল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এতে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ জাহেদ উদ্দিন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মিল্কি রানী দাশ, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তপন কুমার চৌধুরী বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচীর প্রজেক্ট ম্যানেজার আবুল কালাম বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে প্রতি হাজারে এক এর নীচে নামিয়ে আনা ও ২০৩০ সালের মধ্যে ম্যালেরিয়া মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় স্বাস্থ্য বিভাগ ও বেসরকারী সংস্থা ব্র্যাকের সহযোগিতায় এনজেড একতা মহিলা সমিতির পরিচালনায় ২৩২ জন কর্মী পাড়ায় পাড়ায় কাজ করছেন। দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ক্লিনিক স্থাপনের মাধ্যমে ম্যালেরিয়া রোগী চিহ্নিত করার পর বিনা পয়সায় চিকিৎসা ও ঔষুধ প্রদান করা হচ্ছে তিনি জানান।
চিকিৎসকরা জানান, পাহাড়ি এলাকার বিভিন্ন গর্ত, ডোবা, ঝোপঝাড় ও ছড়ায় পানি জমে মশার প্রজনন হয়ে থাকে। তাই সন্ধ্যা থেকেই মশারি ব্যবহার, বসতঘরের আশপাশের ঝোপঝাড়, গর্ত, ডোবা পরিষ্কার রাখলে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
এদিকে ম্যালেরিয়া নির্মূলে ঘরে ঘরে পরিবার ভিত্তিক বিতরণকৃত কীটনাশকযুক্ত মশারীর সদব্যবহার করছেনা দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় বসবাসরতরা। তারা নদী খালে পুকুরে মাছ ধরতে ব্যবহার করছে এ মশারী। এতে দিন দিন বাড়ছে প্রাণঘাতী ম্যালেরিয়া রোগ। তাই তৃণমূল পর্যায়ে জনসচেতনতা বাড়ানো ও বিনামূল্যের কীটনাশকযুক্ত মশারী ব্যবহারের শতভাগ নিশ্চিতসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম আরও বাড়ানোর দাবী তুলেন অতিথিরা।
এ সভায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, মসজিদের ইমাম, এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও স্বাস্থ্য কর্মীরা অংশ গ্রহণ করেন।