উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনে আর্থিক সহায়তা করার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টির পাঁচ সাবেক শিক্ষার্থীকে আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
বুধবার ভোররাতে তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপকালে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।
জাফর ইকবাল বলেন, আন্দোলনের সহায়তা করা কোন অপরাধ নয়। সাবেক শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে সহায়তা করতেই পারে।
এসময় তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকীর একটা স্মারকগ্রন্থে আমার কাছে একটা লেখা চেয়েছিল। সেই লেখাটার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আমাকে দশ হাজার টাকা সম্মানী দেওয়া হইছে। আমি এই সম্মানীর টাকাটা নিয়ে আসছি, এই আন্দোলনের ফান্ডে এই টাকাটা দিচ্ছি, তোমরা রাখো। এবার পারলে আমাকে অ্যারেস্ট করুক। সাবেক শিক্ষার্থীরা টাকা দিয়ে সহায়তা করায় অ্যারেস্ট হলে আমাকেও অ্যারেস্ট করুক।
তিনি বলেন, ঢাকা থেকে আসার আগে একজন আমাকে বলেছিলেন শাবিতে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষেধ। আমিও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন বহিরাগত, আমি আমার শিক্ষার্থীদের কাছে এসেছি। এবার আমাকে অ্যারেস্ট করুক।
এ সময় সঙ্গে থাকা ড. ইয়াসমিন হকও বলেন, আমিও বহিরাগত আমাকেও গ্রেপ্তার করুক।
জাফর ইকবাল আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের দুর্দশার কথা শুনেন। একটা পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের দুর্দশার কথা শুনে তিনি কেঁদে ফেলেন।
এরআগে ভোররাত ৩টা ৫৫ মিনিটের সময় জাফর ইকবাল শাবি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। বিশ্ববিদ্যালয় ফটক থেকে পায়ে হেঁটে তিনি অনশনরত শিক্ষার্থীদের কাছে যান, এবং তাদেরকে অনশন ভঙ্গের অনুরোধ জানান। অনশনরত শিক্ষার্থীরা একপর্যায়ে তার এই অনুরোধে সম্মত হয়ে সকলে মিলে পানি পান করে অনশন ভঙ্গ করার প্রতিশ্রুতি দেয়।
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থী আন্দোলনের খরচ নির্বাহের জন্যে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার অভিযোগে ঢাকা থেকে পাঁচ প্রাক্তনিকে আটক করেছে পুলিশের বিশেষ দল। তাদেরকে মঙ্গলবার সিলেটের আনা হয়েছে। এরপর নগরের জালালাবাদ থানায় মামলা হয় তাদের বিরুদ্ধে।
গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীরা হলেন- হাবিবুর রহমান স্বপন, রেজা নূর মঈন দীপ, নাজমুস সাকিব দ্বীপ, এ কে এম মারুফ হোসেন ও ফয়সাল আহমেদ। এর মধ্যে হাবিবুর বিশ্ববিদ্যালয়টির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগ থেকে ২০১২ সালে পাস করেছেন। একই বছর আর্কিটেকচার বিভাগ থেকে পাস করেছেন রেজা নূর মঈন দীপ ও নাজমুস সাকিব দ্বীপ।