নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে মাটিচাপা দেওয়া বস্তাবন্দী তিনটি মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বঁটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকালে মিজমিজি পশ্চিম পাড়া এলাকার নিহত লামিয়া আক্তারের স্বামী ইয়াসিন মিয়ার তথ্য অনুযায়ী স্থানীয় একটি পুকুর থেকে বঁটিটি উদ্ধার করা হয়। পুকুরটি নিহত লামিয়ার ভাড়া বাসা থেকে ১০০ গজ দূরে।
গত শনিবার ওই পুকুর থেকে নিহত লামিয়া আক্তার ও তাঁর চার বছরের ছেলে আবদুল্লাহ রাফসান এবং বড় বোন স্বপ্না আক্তারের লাগেজভর্তি রক্তমাখা কাপড় উদ্ধার করে পুলিশ। ওই লাগেজের ভেতরে নিহত লামিয়ার বাবা মৃত আবদুস সামাদ ও মা শাহনাজ বেগম এবং বড় বোন স্বপ্না আক্তারের জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া যায়। নিহত লামিয়া পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) মো. হানিসুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, রিমান্ডের প্রথম দিনে নিহত লামিয়ার স্বামী ইয়াসিনের তথ্য অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বঁটি পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের তিন-চারজন পুকুরের পানিতে নেমে তল্লাশি চালিয়ে বঁটিটি উদ্ধার করেন। হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, ঝগড়ার এক পর্যায়ে ৮ এপ্রিল রাতে তিনি একাই স্ত্রীসহ তিনজনকে হত্যা করেন। নেশাগ্রস্ত ও উপার্জন না করা, উচ্ছৃঙ্খল আচরণের কারণে লামিয়া তাঁর সঙ্গে থাকতে চাইতেন না। লামিয়ার সঙ্গে থাকতে না দেওয়ার কারণেই অন্য দুজনকেও হত্যা করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর দেওয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে।
গত শুক্রবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে দুই নারীর খণ্ডিত ও এক শিশুর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত লামিয়ার স্বামী ইয়াসিন মিয়াকে (২৪) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পারিবারিক কলহের জেরেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে।
এ ঘটনায় নিহত লামিয়ার মেজ বোন মুনমুন আক্তার বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে ইয়াসিন মিয়া, তাঁর বাবা দুলাল মিয়া ও বোন শিমু আক্তারকে আসামি করা হয়েছে। ওই মামলায় শনিবার বিকেলে পুলিশের আবেদনের পর ইয়াসিন মিয়ার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।