অনেক নাটকীয়তার পর ফিলিস্তিনের গাজায় স্থানীয় সময় গত রোববার যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। এই যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পূর্বনির্ধারিত সময় ছিল সকাল সাড়ে আটটায়। তবে শেষ মুহূর্তে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানান দুঃসংবাদ। তিনি বলেন, হামাস মুক্তি দেবে এমন জিম্মিদের তালিকা না দিলে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে না। ওদিকে হামাসও জিম্মিদের তালিকা না দেওয়ার পেছনে কারিগরি সমস্যার কথা জানায়।
পরে অবশ্য সে সমস্যা কাটিয়ে উঠে তিনজন জিম্মির নাম জানায় হামাস। এরপর যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পথ প্রশস্ত হয়। নির্ধারিত সময় থেকে তিন ঘণ্টা দেরিতে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কার্যকর হয় যুদ্ধবিরতি।
হামাসের সেই কারিগরি সমস্যা কী ছিল, কেনইবা জিম্মিদের তালিকা দিতে দেরি হয়েছিল, তা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আল–জাজিরা।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, যুদ্ধের মধ্যে হামাস ও মাঠপর্যায়ে তাঁদের সদস্যদের মধ্যে যোগাযোগের প্রক্রিয়া কোনো প্রচলিত উপায়ে হয় না। কেউ হয়তো ফোন ধরেন না কিংবা ধরার উপায় থাকে না। তখন তাঁকে খুঁজতে সম্ভাব্য অবস্থানগুলোতে লোক পাঠাতে হয়। অর্থাৎ কাকে কোথায় খুঁজে পাওয়া যাবে, সেটা আগে থেকে বুঝতে পারা দুষ্কর।
এটা আরও জটিল হয়ে পড়ে যখন গাজার আকাশজুড়ে শত্রুপক্ষের ড্রোন আর যুদ্ধবিমান উড়তে থাকে। তখন যোগাযোগ আরও কঠিন হয়ে পড়ে। এ সময় চলাচল বিঘ্নিত হয় এবং খুবই সীমিত হয়ে পড়ে।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত মেনে হামাসের পক্ষ থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য সম্ভাব্য জিম্মিদের নামের তালিকা দিতে ‘কারিগরি সমস্যার’ কথা বলার পেছনে আরও একটি কারণের উল্লেখ করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। সেটা হলো, সে সময় গাজায় হামাস সদস্যরা অবাধে চলাচল করতে পারেননি। তাঁরা মুক্তি পেতে যাওয়া জিম্মিদের তালিকা প্রস্তুত করতে পর্যাপ্ত সময় পাননি। জিম্মিরা কে কোথায় আছেন, সেটা বের করাটাও ছিল সময়সাপেক্ষ।
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার আগের তিন দিন গাজায় শক্তিশালী ড্রোন ও বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এই পরিস্থিতিতে নেতৃত্বের সর্বোচ্চ অবস্থানে বসে মাঠপর্যায়ে থাকা যোদ্ধাদের সঙ্গে সাবলীলভাবে যোগাযোগ করাটা ছিল সময়সাপেক্ষ। কারণ, জিম্মিরা ছিলেন গাজায় ছড়িয়ে–ছিটিয়ে। তাঁদের সুনির্দিষ্ট অবস্থান হামাসের অনেক নেতাও জানতেন না।