আহমদ হোসেন ও মোহাম্মদ সোহায়েল ৪ দিনের রিমান্ডে
সিএইচটি টিভি ডেস্ক
  • প্রকাশিত : 21-08-2024
ফাইল ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর পল্টনে মুদিদোকানদার নবীন তালুকদার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আহমদ হোসেন এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মোহাম্মদ সোহায়েলকে চার দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট জসীম উদ্দিন আজ বুধবার এ আদেশ দেন।

আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, পল্টন থানার মামলায় গ্রেপ্তার আহমদ হোসেন ও মোহাম্মদ সোহায়েলকে আজ আদালতে হাজির করে ১০ দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করে পুলিশ। এই দুজনের পক্ষে আদালতে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।

মোহাম্মদ সোহায়েল একসময় র‍্যাবের মুখপাত্র ছিলেন। তিন আজ আদালতে বলেন, ঘটনার সময় তিনি চট্টগ্রামে ছিলেন। এ ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন।

আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে আহমদ হোসেন ও মোহাম্মদ সোহায়েলের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করা হয়, নবীন তালুকদার হত্যার ঘটনার সঙ্গে এই দুই আসামি জড়িত।

আজ সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম শাখা থেকে এই দুজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানানো হয়।

ডিএমপির পক্ষ থেকে বলা হয়, আহমদ হোসেন ও মোহাম্মদ সোহায়েলকে গতকাল মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়। আহমদ হোসেনকে রাজধানীর রামপুরা ও মোহাম্মদ সোহায়েলকে বনানী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর আত্মগোপনে চলে যান আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতারা। আত্মগোপনের তালিকায় আছেন সাবেক মন্ত্রী, সরকারি কর্মকর্তা ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বরত ব্যক্তিরা। তাঁদের কেউ কেউ গ্রেপ্তার হচ্ছেন।

শেখ হাসিনা সরকারের কোনো মন্ত্রীকে গ্রেপ্তারের খবর প্রথম আসে ১৩ আগস্ট। সেদিন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশ। পরে তাঁদের কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে ঢাকা কলেজের সামনে সংঘর্ষে এক হকার নিহত হওয়ার ঘটনায় নিউমার্কেট থানায় করা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

১৪ আগস্ট সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু; সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহ্‌মেদ এবং ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতকে পল্টন থানার মামলায় গ্রেপ্তারের খবর জানায় ডিএমপি। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, খিলক্ষেত থানার নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় এই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

১৬ আগস্ট রাতে ঠাকুরগাঁওয়ের বাড়ি থেকে সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেনকে আটক করে পুলিশ। তাঁকে একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এদিন সেনাবাহিনী থেকে সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকেও গ্রেপ্তার করা হয়। জিয়াউল আহসান সর্বশেষ টেলিযোগাযোগ নজরদারির জাতীয় সংস্থা ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক ছিলেন। তাঁকে নিউমার্কেট থানার হকার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

১৯ আগস্ট সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি ও সাবেক যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মুদিদোকানি আবু সায়েদকে গুলি করে হত্যার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দীপু মনি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি আগে আওয়ামী লীগ সরকারের পররাষ্ট্র ও শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। সবশেষ গতকাল মঙ্গলবার রাতে কক্সবাজারের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদিকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। কক্সবাজারের টেকনাফে একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে র‍্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

শেয়ার করুন