উপদেষ্টার সফর বাতিল, শীতার্তদের কম্বলের কী হবে
সিএইচটি টিভি ডেস্ক
  • প্রকাশিত : 05-01-2025
ফাইল ছবি : সংগৃহীত

সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সফর বাতিল করে ফিরে গেছেন উপদেষ্টা। সফরসূচিতে ছিল উত্তরবঙ্গের ১২টি উপজেলায় তিনি শীতার্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কম্বল বিতরণ করবেন। এ জন্য প্রতিটি উপজেলার জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে দুই হাজার করে কম্বল প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। এখন কম্বলগুলো নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। শীত শেষ হয়ে যাচ্ছে, স্থানীয়ভাবে যদি কম্বলগুলো বিতরণ করা হয়, পরে উপদেষ্টা এলে তাঁরা আবার কম্বল কোথায় পাবেন।

গত ২৪ থেকে ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া নিজ হাতে শীতার্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করবেন বলে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে কম্বল প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় উপদেষ্টা ফিরে যাওয়ায় রাজশাহী ও বগুড়ার তিনটি উপজেলায় একটি কম্বলও বিতরণ করা হয়নি।

 

বর্তমানে শীতে কাঁপছে উত্তরাঞ্চল। রোববার ভোরে রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন শনিবার ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি, শুক্রবার ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি এবং বৃহস্পতিবার ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।

উপদেষ্টার সফরসূচি অনুযায়ী, সর্বশেষ ২৭ ডিসেম্বর দুপুরে রংপুর বিভাগের গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে কম্বল বিতরণ করেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। কথা ছিল এরপর তিনি রাজশাহী বিভাগে ঢুকবেন। ওই দিন বিকেলে বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায় শীতবস্ত্র বিতরণের কথা ছিল। পরদিন ২৮ ডিসেম্বর বগুড়ার শিবগঞ্জ; জয়পুরহাটের কালাই, আক্কেলপুর; নওগাঁর আত্রাইয়ে এবং ২৯ ডিসেম্বর রাজশাহীর পুঠিয়া, মোহনপুর; চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল ও গোমস্তাপুরে শীতার্ত ব্যক্তিদের মধ্যে উপদেষ্টা নিজ হাতে কম্বলগুলো বিতরণ করবেন।

 

এদিকে সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের কারণে সফরের তৃতীয় দিনে রংপুর বিভাগ থেকেই ঢাকায় ফিরে যান উপদেষ্টা। এখন রাজশাহী বিভাগের বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা, রাজশাহীর পুঠিয়া ও মোহনপুর উপজেলায় উপদেষ্টার বিতরণের জন্য জেলা পরিষদ থেকে সরবরাহ করা কম্বলগুলো পড়ে আছে। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের স্থানীয় কর্মকর্তারা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। তবে বিভাগের অন্য উপজেলার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাঁরা কম্বল বিতরণ শুরু করে দিয়েছেন।

পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ কে এম নূর হোসেন বলেন, এগুলো সাধারণ বরাদ্দ নয়। উপদেষ্টা নিজ হাতে বিতরণ করবেন বলে জেলা পরিষদ থেকে কম্বলগুলো সরবরাহ করা হয়েছিল। এখন স্থানীয়ভাবে বিতরণ করলে পরে যদি উপদেষ্টা আসেন, তখন আবার কম্বল কিনতে হবে। এ জন্য উপদেষ্টার সফরসূচি বাতিল হওয়ার পরপরই তিনি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেছেন। তারা পরে জানাবে বলেছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত কিছু জানায়নি।

বগুড়ার সোনাতলার ইউএনও স্বীকৃতি প্রামাণিক আজ দুপুরে বলেন, কম্বলের ব্যাপারে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি। কম্বলগুলো ওভাবেই আছে। যেভাবে নির্দেশনা আসবে, সেভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। রাজশাহীর মোহনপুরের ইউএনও আয়শা সিদ্দিকা বলেন, কম্বল পেয়েছেন। উপদেষ্টার সফর বাতিল হওয়ার কারণেই বিতরণ করা হয়নি। এখন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন।

রাজশাহী স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক পারভেজ রায়হান বলেন, তিনি শুনেছেন কম্বলগুলো পড়ে আছে। বিষয়টি স্থানীয় সরকার বিভাগের নয়, এটা জেলা পরিষদের কম্বল। জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ ব্যাপারে বলতে পারেন।

জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মু. রেজা হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘উপদেষ্টা মহোদয় আবার আসবেন কি না, আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। তাই কম্বল বিতরণ করে দিতে বলা হয়নি। আমরা কনফার্ম হওয়ার চেষ্টা করছি। যদি দেখি উনি আসবেন না, তখন কম্বলগুলো বিতরণ করে দিতে বলা হবে। আমরা বললেই ইউএনওরা কম্বল বিতরণ করে দেবেন।’


 

শেয়ার করুন