পুলিশ সপ্তাহে থাকছে না প্যারেড, নির্বাচনে ভূমিকা নিয়ে নির্দেশনা থাকবে
সিএইচটি টিভি ডেস্ক
  • প্রকাশিত : 13-04-2025
ফাইল ছবি : সংগৃহীত

পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে এবার পুলিশ সপ্তাহ পিছিয়ে গেছে। ২৯ এপ্রিল থেকে ১ মে পর্যন্ত এবারের আয়োজন হবে তিন দিনের। আগামী সংসদ নির্বাচনে পুলিশের ভূমিকা ও কাজ কী হবে, তার নির্দেশনা দেওয়া হবে এবারের পুলিশ সপ্তাহে। তবে এবার কোনো প্যারেড হবে না।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষণের মধ্য দিয়ে পুলিশ সপ্তাহের কার্যক্রম শুরু হবে। এরপর তিনি পুলিশ সদস্যদের পদক পরিয়ে দেবেন। পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে এবারই প্রথম সাত দিন নয়, পুলিশ সপ্তাহ হচ্ছে তিন দিনের এবং কোনো প্যারেড রাখা হয়নি।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, এবার শিল্ড প্যারেডসহ অন্যান্য প্রতিযোগিতাও নেই। পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে পত্রিকায় কোনো ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হবে না। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তাদের সম্মিলন থাকছে না। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়েও ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা যাবেন না। আর প্রধান বিচারপতির সঙ্গেও কোনো সেশন নেই। রেডিও-টেলিভিশনেও থাকবে না বিশেষ কোনো অনুষ্ঠান।

তবে কোনো কোনো পুলিশ কর্মকর্তা মনে করেন, ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। ওই দিন সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। ওই দিন পুলিশ সপ্তাহের অনুষ্ঠান রাখাটাও ঠিক হয়নি।

 

 

আবহাওয়াসহ সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে এবারের পুলিশ সপ্তাহ সংক্ষিপ্ত করে তিন দিন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এতে গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়ই থাকছে

ইনামুল হক, মুখপাত্র, পুলিশ সদর দপ্তর

পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, এবারের পুলিশ সপ্তাহ থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুলিশের ভূমিকা ও কাজ কী হবে, তার নির্দেশনা পাওয়া যাবে। তা ছাড়া পুলিশের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন দাবিদাওয়া, মাঠপর্যায়ের পুলিশের সমস্যাগুলো বিশদভাবে আলোচনার সুযোগ তৈরি হবে।

পুলিশ সদর দপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, বিগত বছরগুলোতে সাধারণত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে পুলিশ সপ্তাহ অনুষ্ঠিত হতো। এবার পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে পুলিশ সপ্তাহ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথমবারের মতো বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে বাহিনীর নীতিনির্ধারকদের ‘কেমন পুলিশ দেখতে চান’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা হবে।

পুলিশ সদর দপ্তরের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, স্বাধীনভাবে কাজের সুযোগ, স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনসহ পুলিশ খাতের জন্য নেওয়া সংস্কার উদ্যোগ বাস্তবায়নে প্রধান উপদেষ্টার কাছে দাবি তুলে ধরবেন পুলিশ কর্মকর্তারা। এ ছাড়া পুলিশের যানবাহন–সংকট ও আবাসন সমস্যার সমাধানে দাবিও জানানো হবে।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, এবার শিল্ড প্যারেডসহ অন্যান্য প্রতিযোগিতাও নেই। পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে পত্রিকায় কোনো ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হবে না। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তাদের সম্মিলন থাকছে না। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়েও ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা যাবেন না।

 

সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পুলিশ সদস্যদের রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) ও বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্বাচনে ভূমিকা রাখার জন্য ও রাজনৈতিক বিবেচনায় পুলিশ সদস্যদের পদক দেওয়া হতো। কিন্তু এবারই প্রথম পেশাদারি ও কাজের যোগ্যতা বিবেচনায় নিয়ে পুলিশ সদস্যদের পদক দেওয়া হচ্ছে।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ১২২টির বেশি পদক দেওয়া যাবে না। গত বছর সর্বোচ্চ ৪০০ জনকে পদক দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া এখন থেকে সারা বছর পেশাদারি ও কাজের যোগ্যতা অনুযায়ী পুলিশ সদস্যদের পদক দিয়ে পুরস্কৃত করা হবে এবং তখন থেকেই তাঁরা আর্থিক সুবিধা পাবেন। পরে পুলিশ সপ্তাহের নির্ধারিত দিনে পদক পরিয়ে সম্মানিত করা হবে।

সার্বিক বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র ইনামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, আবহাওয়াসহ সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে এবারের পুলিশ সপ্তাহ সংক্ষিপ্ত করে তিন দিন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এতে গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়ই থাকছে।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ১২২টির বেশি পদক দেওয়া যাবে না। গত বছর সর্বোচ্চ ৪০০ জনকে পদক দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া এখন থেকে সারা বছর পেশাদারি ও কাজের যোগ্যতা অনুযায়ী পুলিশ সদস্যদের পদক দিয়ে পুরস্কৃত করা হবে এবং তখন থেকেই তাঁরা আর্থিক সুবিধা পাবেন। পরে পুলিশ সপ্তাহের নির্ধারিত দিনে পদক পরিয়ে সম্মানিত করা হবে।

তিন দিনের অনুষ্ঠানসূচি

পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধন করে প্রধান উপদেষ্টা পুলিশের সব ইউনিটের সঙ্গে ভার্চ্যুয়াল শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। এদিন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমের সঙ্গে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা মতবিনিময় করবেন।

দ্বিতীয় দিনে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), র‍্যাব, ট্যুরিস্ট পুলিশ, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ), হাইওয়ে পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), রেলওয়ে পুলিশ, নৌ পুলিশ ও শিল্পাঞ্চল পুলিশ–বিষয়ক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে পৃথক তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরা হবে। পুলিশের প্রতিটি ইউনিট তাদের কর্মকাণ্ড ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা উপস্থাপন করবে।

শেষ দিন হবে পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির স্টল পরিদর্শন ও বার্ষিক পুনাক সমাবেশ। নাগরিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

 

 

শেয়ার করুন