ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ এর কারণে বান্দরবানে বর্ষণে ক্ষতির শিকার হয়েছে রবি মৌসুমের ফসল। এতে পার্বত্য জেলা বান্দরবানের আবাদি জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আর অসময়ের বৃষ্টিতে কৃষকদের জীবনে নেমে এসেছে করুণ পরিণতি। যদিও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে থেকে সরকারি প্রণোদনার দেওয়ার কথা বলছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
বান্দরবান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’-এর প্রভাবে বান্দরবানে
দুইদিন ভারী বর্ষণ হয়েছে। ভারী বর্ষণে কৃষকের পাকা আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে। অধিকাংশ কৃষকের ধান বৃষ্টিতে ভিজে জমিতে নষ্ট হয়েছে। শুধু ধান নয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রবি ফসল বাদাম, টমোটে, সরিষা, মসুর, ধনিয়া, আলু, ভুট্টা, মরিচ,ফুলকপিসহ অন্যান্য শাকসবজি। শীতের এই সময়ে বিভিন্ন ফসল উৎপাদনের জন্য অনেক কৃষকই ব্যাংক থেকে নিয়েছে ঋণ। তবে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বর্ষণে বেশিরভাগ ফসলের ক্ষতির পাশাপাশি অনেক জমি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা এখন চরম বিপাকে পড়েছেন।
বান্দরবানের বালাঘাটার ভরাখালী এলাকার বাদাম চাষি মো. শাহজাহান জানান, লাভের আশায় নদীর পাড় জুড়ে বাদামের কয়েক একর জমি চাষ করেছি। কিন্তু অসময়ে বৃষ্টি আর প্রবল বাতাসে বেশিরভাগ বাদাম ক্ষেত্রই নষ্ট হয়ে গেছে।
বাদাম চাষি মো. শাহজাহান আরো বলেন, বাদাম চাষের জন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিলাম কিন্তু এখন সবই শেষ।
একই এলাকার শীতকালীন সবজি চাষি জাফর আলম বলেন, এই সময়টা বৃষ্টি হয় না, শীত পড়ে আর এই শীতে শীতকালীন সবজি চাষ করেছি। তবে বান্দরবানে দুইদিনের টানা বৃষ্টি আর বাতাসে আমার অনেক সবজি বাগান নষ্ট হয়ে গেছে।
তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন সংস্থা থেকে টাকা নিয়ে সবজি চাষ করেছিলাম। আশা ছিল বিক্রি করে আস্তে আস্তে দেনা মেটাবো কিন্তু এখন কি করবো, সরকার যদি আমাদের অর্থ সহায়তা করে তবে পরিবার নিয়ে চলতে পারবো, না হয় দেনা পরিশোধ করাই দায় হয়ে দাঁড়াবে।
চাষি রুজিনা বেগম বলেন, অতি দ্রুত বীজ, সার ও উপকরণ সহায়তা দিয়ে কৃষকের পাশে দাঁড়াতে হবে এবং সরকারি সহায়তা বাড়িয়ে কৃষকদের এই কষ্ট লাগবে তদারকি ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে কৃষি কর্মকর্তাদের। আর না হলে অনেক কৃষকই বিপদে পড়ে যাবে।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা সঠিকভাবে বলা না গেলেও বান্দরবান জেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে বান্দরবানে প্রায় ৬ হেক্টর চীনাবাদাম আর শীতকালীন সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ২ হেক্টর জমি।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, ক্ষতি পুুষিয়ে নিতে কৃষকদের সরকারি বিভিন্ন প্রণোদনা দেওয়ার পাশাপাশি আগামীতে বিনামূল্যে বীজ ও সার প্রদানসহ সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হবে।
বান্দরবান সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ওমর ফারুক বলেন, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের বান্দরবানে বৃষ্টি হয়েছে আর এতে অনেক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করছি এবং সরকারি প্রণোদনা দেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।