সাইকেল চুরির বিষয়ে অভিযোগ দিতে গিয়ে রেজিস্ট্রারের কাছে দুর্ব্যবহার ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। গতকাল বুধবার বেলা দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কক্ষে এই ঘটনা ঘটে বলে ওই শিক্ষার্থী জানান।
শিক্ষার্থীর নাম ইভান তাহসিব। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রেজিস্ট্রারের অসৌজন্যমূলক আচরণের একটি অডিও ক্লিপ প্রথম আলোর হাতে এসেছে। অডিও ক্লিপে শোনা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার শেখ মো. গিয়াস উদ্দিন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তাঁকে তুমি ও আপনি সম্বোধন করতে শোনা যায়। তিনি বলেন, ‘নিজেরা নিজেদের গাড়ির নিরাপত্তা দেবে। শিক্ষার্থীদের মালামালের দায়িত্ব আমাদের না। আপনি কী খাবেন, না খাবেন, সেটা কি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব? বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনার পড়াশোনার দায়িত্ব আমার। আপনার জিনিসের নিরাপত্তার দায়িত্ব আমার না। শিক্ষার্থীদের কিছু হলে এর দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয়ের না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর দায়ভার নিতে পারবে না।’
একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ক্ষিপ্ত হয়ে রেজিস্ট্রার বলেন, ‘বের হয়ে যাও। এই ওরে বের করে দাও। বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন পড়তে এসেছ, এলাকার কলেজে পড়লেই তো পারতে।’
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের গ্যারেজ থেকে গত তিন মাসে একাধিক সাইকেল চুরি হয়েছে। এ ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা জোরদারের দাবিতে লিখিত অভিযোগ দিতে রেজিস্ট্রার অফিসে যান ইভান তাহসিবসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী। এ সময় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ মো. গিয়াস উদ্দিন সমস্যার সমাধান না করে উল্টো শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে তাঁদের কক্ষ থেকে বের করে দেন।
এ বিষয়ে ইভান তাহসিব বলেন, এক ছোট ভাইয়ের সাইকেল চুরির অভিযোগ জানাতে তাঁরা রেজিস্ট্রার দপ্তরে গিয়েছিলেন। এ সময় রেজিস্ট্রার উত্তেজিত হয়ে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো গ্যারেজ নেই। শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডের মালামালের নিরাপত্তার দায়িত্ব তিনি নিতে পারবেন না।
ইভান বলেন, ‘তিনি যদি গ্যারেজের নিরাপত্তা দিতে না পারেন, তাহলে গ্যারেজ বন্ধ করে দিক; অথবা সাইনবোর্ড টাঙিয়ে ঘোষণা করুক, শিক্ষার্থীদের কোনো মালামালের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় নিতে পারবে না। একপর্যায়ে তিনি আমাকে তাঁর কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।’
এ বিষয়ে জানতে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ মো. গিয়াস উদ্দিনের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার শেখ মো. গিয়াস উদ্দিনের অসৌজন্যমূলক আচরণ করার অভিযোগ উঠেছিল।