শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক ও প্রাথমিকের মতোই ২০ রোজা পর্যন্ত চলতে পারে। তবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করছি। হয়তো একই সময়ে আমরা সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ঘোষণা করার ব্যাপারে ভাবা চিন্তা করা হচ্ছে। তবে করোনার বিস্তারের কারণে কার্যত দুবছর বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখন চালু রাখা খুবই দরকার। গতকাল শুক্রবার বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনীর উদ্যোগে সপ্তম বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে বিষয়টি নিয়ে আলাপকালে দীপু মনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের একাংশের দাবির কারণে, মাধ্যমিকে ক্লাস কিছুদিন কম নেওয়া হতে পারে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, সবাই বলাবলি করছে রমজানে গরম থাকায়, প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে দেন। আসলে তো এখন ক্লাস করা খুবই দরকার। দুটো বছর শ্রেণিকক্ষে ক্লাস হয়নি। এখন শ্রেণিকক্ষে ক্লাস করতে না পারলে তাদের জন্য সিলেবাস শেষ করা কষ্টকর হয়ে যাবে।
রোজায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু রাখতে সরকারের সিদ্ধান্তের পর শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের একটি অংশ এর সমালোচনা করছেন। তারা করোনার আগে কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় রোজায় স্কুল-কলেজ বন্ধ চাইছেন। আওয়ামী লীগের টানা তৃতীয় মেয়াদের প্রথম মেয়াদে যানজটের কথা চিন্তা করে রোজায় রাজধানীতে ক্লাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। এর পর টানা কয়েক বছর একই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু ২০২০ সালে দেশে করোনা মহামারীর প্রকোপের কারণে ১৭ মার্চ থেকে সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরের বছরে সেপ্টেম্বরে স্কুল-কলেজ পর্যায়ক্রমে চালু হতে থাকলেও করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে আবার বন্ধ হয়ে যায় ক্লাস। এ পুরোটা সময়ই অনলাইনে ক্লাস চলেছে। করোনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসার পর বর্তমানে বিধিনিষেধ তুলে দেওয়া হলে শিক্ষাঙ্গনে ফেরে স্বাভাবিক পরিস্থিতি। কিন্তু এতে রাজধানীতে যানজটের তীব্রতা ফিরে এসেছে। এর মধ্যে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, প্রাথমিকে ক্লাস চলবে ২০ রোজা পর্যন্ত। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ২৪ রোজা পর্যন্ত ক্লাস নেওয়া হবে।
এদিকে বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনীর সপ্তম বার্ষিক সম্মেলনে এদিন বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা অনেক কলেজে অনার্স দিয়েছিলাম। যা ফলপ্রসূ হচ্ছে না। তাই আপাতত অনুমোদন বন্ধ রেখেছি। পুনর্বিন্যাসের চেষ্টা করছি। ডিগ্রি যে কোর্সটা হয়, সেখানে ভাষা, আইসিটি সংযুক্ত করার চেষ্টা করছি।
সম্মেলন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের ব্যাপারে নীতিমালার বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, নীতিমালা না, আমরা যে নিয়মগুলো পালন করি, সেগুলোর কথাই বলা হয়েছে। খুবই সচেতনভাবে সেগুলো অনুসরণ করা হয়। আমরা যে কোনো বিষয়ে ঢালাওভাবে মন্তব্য করতে পছন্দ করি। এটি ঠিক নয়। ভালোমন্দ সব জায়গায় আছে। দুজন বা পাঁচজন ভালো কাজ করলেন না। হয়তো একটু ভুল কাজ করলেন তার জন্য সবাইকে দায়ী করা ঠিক নয়।