শেখ হাসিনার পিয়ন ‘৪০০ কোটির মালিক’ জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু
সিএইচটি টিভি ডেস্ক
  • প্রকাশিত : 01-10-2024
ফাইল ছবি : সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে অনুসন্ধান শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।

সিআইডি সূত্র জানায়, শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনে তাঁর ব্যক্তিগত স্টাফ (পিয়ন) ছিলেন জাহাঙ্গীর। যাঁর কাজ ছিল সুধা সদনে খাওয়ার পানি পরিবেশন করা। এ কারণে তাঁর নাম হয় পানি জাহাঙ্গীর। পরে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হলে জাহাঙ্গীর নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী পরিচয় দেওয়া শুরু করেন। এ পরিচয় ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের পদ, চাকরি, নিয়োগ ও বদলি–বাণিজ্য করেন জাহাঙ্গীর। নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির পদ নিয়ে গড়েছেন কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ। প্রতারণার মাধ্যমে তিনি ৪০০ কোটি টাকার মালিকসহ গাড়ি-বাড়ির মালিক হয়েছেন বলে জানা গেছে।

গত জুলাই মাসে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের বাসার সাবেক এক কর্মীর অর্থসম্পদের বিষয়টি সামনে এনেছিলেন। সেই ব্যক্তিটি ছিলেন জাহাঙ্গীর। সেদিন শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘আমার বাসায় কাজ করেছে, পিয়ন ছিল সে, এখন ৪০০ কোটি টাকার মালিক। হেলিকপ্টার ছাড়া চলে না। বাস্তব কথা। কী করে বানাল এত টাকা? জানতে পেরেছি, পরেই ব্যবস্থা নিয়েছি।’

গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জাহাঙ্গীর নোয়াখালী-১ আসন (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। তিনি নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নের নাহারখিল গ্রামের বাসিন্দা।

সিআইডি সূত্র আরও জানায়, বিভিন্ন মাধ্যমে তারা জানতে পেরেছে, জাহাঙ্গীরের স্ত্রী কামরুন নাহারের নামে রয়েছে ৭ কোটি ৩০ লাখ টাকার সম্পদ। যার মধ্যে ধানমন্ডিতে ২ হাজার ৩৬০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, ১টি গাড়ি, বিভিন্ন ব্যবসায় ৭৩ লাখ টাকা বিনিয়োগ। তাঁর ব্যাংক হিসাব নম্বরে ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা জমা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। এ ছাড়া জাহাঙ্গীরের নিজের নামে তাঁর এলাকায় ৪ কোটি টাকার কৃষি ও অকৃষিজমিদ; রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও নিউমার্কেটে দুটি দোকান; মিরপুরে সাততলা ভবন ও দুটি ফ্ল্যাট; গ্রামের বাড়িতে একতলা ভবন এবং চাটখিলে চারতলা বাড়ি রয়েছে। নোয়াখালীর মাইজদী শহরের হরিনারায়ণপুর এলাকায় তাঁর পরিবারের একটি আটতলা বাড়ি রয়েছে; যার ১৯টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ১৮টি ভাড়া দেওয়া আছে।

সিআইডি বলছে, অস্থাবর সম্পদ হিসেবে জাহাঙ্গীরের নগদ ও ব্যাংক মিলিয়ে ২ কোটি ৫২ লাখ ২ হাজার ৪৩০ টাকা, ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকার ডিপিএস, এফডিআর ১ কোটি ৩০ লাখ ৫৫ হাজার ৯৬৮ টাকা; তাঁর স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবের স্থিতি ২৭ লাখ ৯৭ হাজার ৪৫৫ টাকা, ডিপিএস ১৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং অংশীদারি ফার্মে ৬ কোটি ২৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকার বিনিয়োগ আছে বলে তথ্য পাওয়া যায়। এ ছাড়া জাহাঙ্গীর আলম এ কে রিয়েল এস্টেট লিমিটেড নামে একটি ডেভেলপার কোম্পানির মালিক ও হুন্ডির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেছেন বলে জানতে পেরেছে সিআইডি।

শেয়ার করুন