রাঙামাটি শহরের উপকন্ঠে অতর্কিত সশস্ত্র হামলার ১২ ঘন্টা না পেরোতেই এবার খোদ রাঙামাটি শহরেই রাজবাড়ি স’মিলে মধ্যরাতো সশস্ত্র হামলা চালিয়ে অগ্নি সংযোগ করেছে অস্ত্রধারী উপজাতীয় পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা। বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টার সময় রাজবাড়ি স’মিলের পেছনের দিকে কাপ্তাই হ্রদের তীরবর্তী স্থানে জমিয়ে রাখা গোল কাঠের বিশাল স্তুপে পেট্টোল ছিটিয়ে আগুণ লাগিয়ে দেয় একদল অস্ত্রধারী পাহাড়ি যুবক।
স’মিলের নিরাপত্তা প্রহরী আবুল কাশেম জানিয়েছেন, রাতে দুই যুবক সমিলের উপরে এসে জানায়, তাদের বোটটি নষ্ট হয়ে গেছে। তাই তারা মিলে এসেছে। বোটটি মেরামত করতে হবে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আরো এক যুবক অস্ত্র নিয়ে এসে প্রহরী আবুল কাশেমের বুকে তাক করে। অন্য যুবকরা এসময় এক রাউন্ড গুলি ছুড়ে এবং পেট্টোল ঢেলে দিয়ে স্তুপকৃত গোল কাঠে আগুণ ধরিয়ে দেয়। এই ঘটনার সাথে সাথেই মিলের নিরাপত্তায় থাকায় অন্যান্য প্রহরীরাসহ সকলে মিলে মিল ছেড়ে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের উপর এসে অবস্থান নেয়।
এদিকে স’মিলে দাউ দাউ করে আগুন জ¦লতে দেখে স্থানীয়রা দমকল বাহিনী, পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে খবর দিলে কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে কোতয়ালী থানা পুলিশের একটি দল, সদর সেনা জোনের দুইটি টহল দল ও দমকল বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থলে থাকা কোতয়ালী থানার এসআই নয়ন প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, আমরা খবর পেয়েই এখানে এসে সার্বিক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে বিষয়টি নিয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছি।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, একটি দেশীয় ইঞ্জিন বোট নিয়ে উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা কাপ্তাই হ্রদের তীরবর্তী রাজবাড়ি স’মিলে এসে ছদ্মবেশে উপরে উঠে গুলি ফুটিয়ে গাছে আগুন লাগিয়ে দেয়। পরবর্তীতে স্থানীয়দের শোরগোলে সেই বোটের মাধ্যমেই কাপ্তাই হ্রদের বন্দুকভাঙ্গার দিকে চলে যায়। সমিলের নিরাপত্তা প্রহরীরা জানিয়েছেন, গায়ে কম্বল মুড়ানো অবস্থায় উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা উপড়ে উঠেছিলো।
এদিকে, বুধবার একই দিনে রাঙামাটি সদরে উপজাতীয় আঞ্চলিক সংগঠনে পক্ষ থেকে পরপর তিনটি ঘটনা সংগঠিত হওয়ার পেছনে সূদুর প্রসারী পরিকল্পনার প্রাথমিক ইঙ্গিত বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
বুধবার সকাল ১১টার সময় সদর উপজেলাধীন দেপ্পোছড়ি এলাকায় কাঠ বোঝাই ট্রাকে অতর্কিত ব্রাশ ফায়ার, বেলা ১২টার সময় রাঙামাটি সরকারী কলেজে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীদের কলেজ প্রাঙ্গণে শিক্ষা সহায়তা কার্যক্রম কর্মসূচী পালনে পিসিপি কর্তৃক বাধা প্রদানসহ বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে খোদ রাঙামাটি শহরেরই রাজবাড়ি স’মিলে গুলি ফুঠিয়ে গাছের স্তুপে পেট্টোল ছটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে নিজেদের সক্ষমতার পাশাপাশি ভবিষ্যত সশস্ত্র হামলার পূর্ব প্রস্তুতির ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
একই দিনে এই ধরনের সশস্ত্র হামলার ঘটনায় আতঙ্কের পাশাপাশি উৎকন্ঠিত অবস্থা বিরাজ করছে সাধারণ বাসিন্দাদের মাঝে।