পার্বত্য জেলা বান্দরবানের তিন উপজেলা থানচি, রোমা ও রোয়াংছড়িতে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম। যৌথ অভিযান থাকার কথা উল্লেখ করে ইসি সচিব বলেন, বর্তমানে বান্দরবানের থানচি, রোমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব পালন করছে। এজন্য এ তিন উপজেলার নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দপ্তর, সংস্থার জ্যেষ্ঠ সচিব, সচিব ও দপ্তর প্রধানদের সঙ্গে এই সভা করে ইসি। সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল, নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর ও মো. আনিছুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। ইসি সচিব জাহাংগীর আলমসহ কমিশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারাও সভায় উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে সচিব জানান, এবার উপজেলা নির্বাচনে অন্য স্থানীয় সরকার নির্বাচনের চেয়ে বেশি সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত করা হবে। চার ধাপে ভোট হওয়ায় জেলা পর্যায়ে সংশ্লিষ্টদের চাহিদা অনুযায়ী মোতায়েন করা হবে। পার্বত্য জেলা বান্দরবানে বিশেষ করে রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়িতে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে। আপাতত এ তিনটি উপজেলার নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তীতে সুবিধাজনক সময়ে এ নির্বাচন করা হবে।
অপারেশন চলমান থাকায় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সুপারিশের ভিত্তিতে এ তিনটি উপজেলার নির্বাচন পরবর্তীতে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান ইসি সচিব জাহাংগীর আলম। আগামী ৮ মে রোয়াংছড়ি ও থানচিতে ভোট হওয়ার কথা রয়েছে। রুমার ভোট হওয়ার কথা ২১ মে।
এবার প্রথম ধাপে ১৫০ ও দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলার ভোট হওয়ার কথা রয়েছে। তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলার ভোট ২৯ মে এবং চতুর্থ ধাপের ভোট হবে ৫ জুন।
গত ২ এপ্রিল রুমা উপজেলার সোনালী ব্যাংকে ডাকাতি করে অর্থ লুট করে একদল সশস্ত্র লোক। পুলিশের ১০টি এবং আনসার সদস্যের চারটি অস্ত্রও লুট করে নিয়ে যায় তারা। অপহরণ করা হয় ব্যাংকটির ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে। দুদিন পর রুমার একটা পাহাড়ি এলাকা থেকে ছাড়া পান তিনি।
রুমার ঘটনার একদিন পর ৩ এপ্রিল থানচি উপজেলার সোনালী ও কৃষি ব্যাংকেও দিন-দুপুরে অর্থ লুটের ঘটনা ঘটে। দুটি ঘটনায় পাহাড়ে সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ জড়িত বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরপর থেকে লুট হওয়া অস্ত্র-অর্থ উদ্ধার, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে রুমা ও থানচিতে অভিযান চালাচ্ছে যৌথবাহিনী। অভিযানে অংশ নিয়েছে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব ও পুলিশের সমন্বয়ে যৌথ বাহিনী। যৌথ বাহিনীর এ অভিযান সমন্বয় করছে সেনাবাহিনী। যৌথ বাহিনীর এই অভিযানে বিভিন্ন এলাকা থেকে এখন পর্যন্ত ২১ নারীসহ ৭১ জনকে গ্রেপ্তারের খবর জানিয়েছে পুলিশ।