পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রধান সমস্যা ভূমি। পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি কমিশন গঠন হয়েছে (অর্থাৎ পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন)। আজকে এই সমস্যা গুলো সমাধান হয়ে যেতো। যদি ভূমি কমিশন ঠিক মতো কাজ করতে পারতো আজ এই সমস্যা হতো না। বান্দরবানের লামার উপজেলার সরই ইউনিয়নের রেংয়েন ম্রো পাড়ায় পুড়ে যাওয়া ঘর-বাড়ি পরিদর্শনে গিয়ে এ কথা বলেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সদস্য কংজরী চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) সকালে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত দল লামা উপজেলা সরই ইউনিয়নের রেংয়েন ম্রো পাড়ায়অগ্নিসংযোগ, হামলা, ভাংচুরের ঘটনায় তদন্ত করতে যান।
এ সময় কংজরীর সঙ্গে ছিলেন পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) জেলা ও দায়রা জজ মো: আশরাফুল আলম, উপ-পরিচালক মোহাম্মদ গাজী সালাউদ্দিন ও রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা কার্যালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: রবিউল ইসলাম। তারা লামা সরই ইউনিয়নের রেংয়েন ম্রো পাড়ার ঘটনাস্থল সরেজমিন পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন শেষে কমিশনের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সদস্য কংজরী চৌধুরী আরো বলেন, ২০২১ সালে জুন মাস পর্যন্ত তৎপর আজ ২০২৩ জানুয়ারি এর মধ্যে কোন মিটিং হয়নি। ভূমি কমিশন মিটিং দিলেই একটি পক্ষ হরতাল ডাকে। কিন্তু কেন ডাকে- তাও আমি জানিনা। হরতাল পক্ষ এতই শক্তিশালী যে সরকার তাদের কাছে জিম্মী কিনা- তাও আমি জানিনা। সবাই মিলে এই সমস্যা (ভূমি) সমাধান করতে হবে এবং প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে হবে। আমরা যা দেখলাম তা প্রতিবেদন আকারে লিখব। আমরা সরকারকে সুপারিশ করব, বাস্তবায়নের দায়িত্ব সরকারের।
রেংয়েন ম্রো পাড়া পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সামনে তিনি আরো বলেন, যেটা বাস্তবতা সেটা সরকারের কাছে তুলে ধরা হবে। আক্রমণকারী অসুস্থ মানসিকতার ছিল। রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাদেরকে আক্রমণ করেছে, বাড়ি ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে- তছনছ করেছে, তাদের টাকা-পয়ঁসা নিয়ে গেছে।
এদিকে পাড়াবাসীদের অভিযোগ, ট্রাকভর্তি শতাধিক লোকজন এসে গ্রামবাসীদের উপর হামলা চালায় । রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটে। হামলাকারীদের মধ্যে কেউ কেউ বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগের মত ঘটনা ঘটায় । পাড়াবাসীর অনেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে রক্ষা পায় । তাদের উচ্ছেদ করে জমি দখলের জন্য এ কাজ করেছে লামা রাবার ইন্ড্রাস্ট্রিজের লোকজন এমন দাবি পাড়াবাসীদের।
পাড়াবাসীরা আরো জানান, গত বছরের ২৬ মার্চ লামা সরই ইউনিয়নে লাংকম ম্রো পাড়া, জয়চন্দ্র ত্রিপুরা পাড়া ও রেংয়েন ম্রো পাড়া মিলে ৩৬টি পরিবার বসবাস করা ৪০০ একর জায়গায় রাবার ও কাজু বাদাম চাষের লক্ষ্যে লামা রাবার কোম্পানি আগুন দেয়। আগুনে প্রায় ৩৫০ একর বনভূমি পুড়ে বিরাণ হয়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে।
ফলে কয়েক দিন ধরে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকটে পড়ে তিনপাড়ার ৩৬টি পরিবার। এরপর থেকে ৪০০ একর জমি রক্ষায় আন্দোলন করে আসছে পাড়াবাসী। এর মধ্যে রেংয়েন ম্রো পাড়ার একটি ঝিরিতে বিষ ঢালা ও ৩০০টি কলাগাছ কেটে ফেলার অভিযোগ আসে রাবার কোম্পানির লোকজনের বিরুদ্ধে।