সে ভুল পথে গেছে, যে পথে গেছে সেজন্য আমি খুব লজ্জা পায়, সে আমার কথা বিশ্বাস করেনি। সে গত দুই বছর ধরে নিখোঁজ ছিলো। কেএনএফএ যাবেন না, নিজের ছেলেকে কেউ কেএনএফএ পাঠাবেন না। আজ সোমবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে বান্দরবান সদর হাসপাতাল মর্গে নিহত সন্তানের লাশ নিতে এসে অশ্রুসিক্ত নয়নে কথাগুলো বলছিলেন বান্দরবানের রুমা উপজেলায় যৌথ বাহিনীর সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত বেনেট ম্রো এর পিতা লিপমাং ম্রো।
গত রোববার দুপুরে বান্দরবানের রুমায় নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে গোলাগুলির ঘটনায় নিহত কেএনএফ সদস্যের লাশ সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হয়। এসময় লাশ নিতে সদর হাসপাতাল মর্গে আসেন নিহতের পরিবারসহ স্বজনরা।
নিহতের পিতা লিপমাং ম্রো জানায়, গত দুই বছর আগে পরিবারের সাথে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে বের হয় বেনেট ম্রো। এরপর থেকে তার আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। গত রোববার আইনশংখলা বাহিনীর সাথে গোলাগুলিতে সে নিহত হলে তার ছবি দেখে পরিবারের লোকজন তাকে চিনতে পারে এবং সে যে বিপথে গেছে তা জানতে পারে। নিজের ছেলে বিপথে যাওয়ায় অনুতপ্ত পিতা লিপমাং ম্রো আর কোন সন্তান যাতে এই পথে না যায়, সদর হাসপাতাল মর্গে বারবার তিনি সবাইকে এই অনুরোধ করেন। তার লাশ খ্রিস্টান ধর্মানুসারে সুয়ালক ইউনিয়নের শ্যারন পাড়ায় দাফন করা হবে।
আরো জানা গেছে, নিহত কেএনএফ সদস্য বেনেট ম্রো জেলার রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের আরথা পাড়ার বাসিন্দা। সে ম্রো সম্প্রদায়ের হলেও বম সম্প্রদায়ের মেয়ে বিয়ে করে কেএনএফএ যোগ দেন, জেলার সুয়ালক ইউনিয়নের শ্যারন পাড়ায় তার স্ত্রী পরিবার নিয়ে বসবাস করছিলেন।
রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন জানান, ময়না তদন্ত শেষে কেএনএফ সদস্যের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে, এই ঘটনায় একটি মামলা রুজুর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
প্রসঙ্গত, সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) এর বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনীর অভিযানের মুখে আতঙ্কে গত শনিবার সন্ধ্যায় মারমা সম্প্রদায়ের অন্তত ৫১টি পরিবারের ১৪৬ জন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে রুমা সদরে আশ্রয় গ্রহন করে।