স্থানীয়রা রাতে কয়েকটি গুলির শব্দ পান, তবে ভয়ে বের হননি কেউ
সিএইচটি টিভি ডেস্ক
  • প্রকাশিত : 22-02-2025
ফাইল ছবি : সংগৃহীত

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় গতকাল শুক্রবার রাতে যে তিনজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তাঁরা সবাই একসময় চরমপন্থী দলের নেতা–কর্মী ছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। স্থানীয়রা গতকাল রাতে কয়েকটি গুলির শব্দ পেয়েছে, তবে ভয়ে কেউ বাড়ি থেকে বের হননি।

নিহত তিনজন হলেন ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার আহাদনগর গ্রামের হানেফ আলী (৫৬) ও তাঁর শ্যালক উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের লিটন (৩৫) এবং কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার রাইসুল ইসলাম (২৫)। হানেফ পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (জনযুদ্ধ) আঞ্চলিক নেতা ছিলেন। তিনি একটি মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন, পরে তিনি সাধারণ ক্ষমা পেয়ে মুক্তি পান।

গতকাল রাতে শৈলকুপা উপজেলার রামচন্দ্রপুর শ্মশানঘাট এলাকায় প্রতিপক্ষের লোকজন তিনজনকে গুলি করে হত্যা করে। রাতেই ঘটনাস্থল থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁদের সবার মাথায় গুলির চিহ্ন আছে। আরেক চরমপন্থী দল জাসদ গণবাহিনী বার্তা পাঠিয়ে এই হত্যার দায় স্বীকার করেছে।

 

স্থানীয় বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম বলেন, গতকাল রাতে তাঁরা মাঠের দিকে বেশ কয়েকটি গুলির শব্দ শুনতে পান। তবে ভয়ে আর কেউ ঘর থেকে বের হননি। পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনটি মরদেহ ও দুটি মোটরসাইকেল পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর তাঁরা পুলিশে খবর দেন।

 

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টি (জনযুদ্ধ) ও জাসদ গণবাহিনীর মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। গতকাল রাতে রামচন্দ্রপুর শ্মশানঘাট এলাকায় পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের গোপন বৈঠকের খবর পায় প্রতিপক্ষ। জাসদ গণবাহিনীর শীর্ষ নেতা কালুর নেতৃত্বে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি মুঠোফোনে বার্তা পাঠিয়েছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, কালুর বাড়ি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পশ্চিম আব্দালপুর গ্রামে। নিহত হানিফের বিরুদ্ধে হত্যাসহ কমপক্ষে ১৩টি মামলা আছে।

শৈলকুপা উপজেলার রামচন্দ্রপুর পুলিশ ক্যাম্পের মতিয়ার রহমান বলেন, রাতে স্থানীয়রা গোলাগুলির শব্দ পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিনজনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন তাঁরা।

শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুম খান বলেন, ‘সোর্সের মাধ্যমে খবর পাই, গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এরপর নিশ্চিত হওয়া যায় ঘটনাস্থলে তিনজনের মরদেহ পড়ে আছে। লাশ উদ্ধার করে রাতেই থানায় আনা হয়েছে।’

উল্লেখ্য, ২০০৩ সালের ৫ ডিসেম্বর একই স্থানে পাঁচজনকে হত্যা করে চরমপন্থীরা।

 

শেয়ার করুন