মিশরের সাকারায় প্রায় ৪ হাজার ১০০ বছরের পুরানো সমাধি খুঁজে পেয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। সমাধিটি একজন চিকিৎসকের। ধারণা করা হচ্ছে, এই চিকিৎসক কোনো ফারাওয়ের চিকিৎসা করতেন। প্রাচীন মিশরের রাজাদের বলা হতো ফারাও।
একদল ফরসি ও সুইস প্রত্নতাত্ত্বিক এই সমাধি খুঁজে পেয়েছে। যদিও সমাধির বেশিরভাগ জিনিসই চুরি হয়ে গেছে। তারপরেও গবেষকেরা অবশিষ্ট যা খুঁজে পেয়েছেন, সেগুলোর পাঠোদ্ধার করে সম্প্রতি প্রকাশ করেছেন। সমাধিতে পাওয়া চিত্র এবং বিভিন্ন হায়ারোগ্লিফিক শিলালিপির অর্থ উদ্ধার করা গেছে। গবেষকেরা বলছেন, এই চিকিৎসকের নাম ছিল তেতেনেবেফু। শিলালিপিতে আরও বলা হয়েছে, তেতেনেবেফু চিকিৎসকের পাশাপাশি আরও অনেক দায়িত্ব পালন করতেন। রাজদরবারের প্রধান চিকিৎসক, ধর্মযাজক, ডেন্টিস্ট ও ঔষধি উদ্ভিদের পরিচালক ছিলেন।
সমাধির দেয়ালে আঁকা শিল্পকর্মছবি: মিশরের পর্যটন ও পুরাকীর্তি মন্ত্রাণালয়
ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেএনএইচ সেন্টার ফর বায়োমেডিক্যাল ইজিপ্টোলজির অনারারি লেকচারার রজার ফরশো। তিনি বলেন, ‘প্রাচীন মিশরীয় দন্ত চিকিৎসকদের পক্ষে প্রমাণ পাওয়া অত্যন্ত দুর্লভ বিষয়।’
এর আগে সম্ভবত কোনো প্রাচীন মিশরীয় দন্ত চিকিৎসকের সমাধি পাওয়া যায়নি। আর তাঁকে নিয়ে শিলালিপিতে যা লেখা রয়েছে, তাতে বোঝা যায় তিনি রাজদরবারের প্রধান চিকিৎসক ছিলেন। কারণ, তাঁর সমাধি রঙিন ছবি দিয়ে সাজানো ছিল। সেখানে জার ও ফুলদানির ছবিও দেখা যাচ্ছে। সঙ্গে রয়েছে কিছু জ্যামিতিক ছবি। তবে ছবিগুলো এত স্পষ্ট যে মনে হয় মাত্র কিছু দিন আগে ওগুলো আঁকা হয়েছে। ছবি দেখে বোঝার উপায় নেই যে ওগুলো ৪,১০০ বছরের পুরানো।
সমাধিতে পাওয়া গেছে নকশা করা দেয়ালছবি: মিশরের পর্যটন ও পুরাকীর্তি মন্ত্রাণালয়
তবে তেতেনেবেফু ঠিক কোন ফারাওয়ের সময় জীবিত ছিলেন তা জানা যায়নি। তবে গবেষক দলের প্রধান ও জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ের মিশরবিষয়ক গবেষক ফিলিপ কলমবার্টের মতে, দ্বিতীয় পেপির আমলে এই চিকিৎসক বেঁচে ছিলেন। দ্বিতীয় পেপি মিশরে রাজত্ব করেছিলেন ২২৪৬-২১৫২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে। সম্ভাবনা আছে, এই চিকিৎসক একসঙ্গে একাধিক ফারাওয়ের চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেছেন।
সমাধির দেয়ালে আঁকা শিল্পকর্ম।ছবি: মিশরের পর্যটন ও পুরাকীর্তি মন্ত্রাণালয়
তবে এই সমাধিতে কোনো মানুষের দেহাবশেষ পাওয়া যায়নি। বেশিরভাগ জিনিসই আগে চুরি হয়ে গেছে। তবে সমাধিটি নিয়ে এখনো চলছে গবেষণা।
সূত্র: বিবিসি