প্রায় আট ঘণ্টা পর শাহবাগ মোড় ছেড়েছেন কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা। অবরোধ প্রত্যাহারের আগে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সারা দেশে আবারও ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন তাঁরা।
সরকারি চাকরির সব গ্রেডে ন্যূনতম কোটা (৫ শতাংশ) রেখে কোটাব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কার করে সংসদে আইন পাসের এক দফা দাবিতে এই আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।
‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে এসে বেলা সোয়া ১১টার দিকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। সন্ধ্যা ৭টা ৩৩ মিনিটে তাঁরা রাস্তা ছেড়ে দেন।
অবরোধ প্রত্যাহারের আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ বলেন, আগামীকাল বেলা সাড়ে তিনটা থেকে সারা দেশে রেলপথ ও সড়কে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। বেলা সাড়ে তিনটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে ব্লকেড কর্মসূচির মিছিল শুরু হবে। সারা দেশে শিক্ষার্থীরা তাঁদের নিকটস্থ পয়েন্টে ব্লকেড কর্মসূচি পালন করবেন।
দুপুর ১২টার দিকে শাহবাগ মোড়ে শিক্ষার্থীদের অবস্থানছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
সারা দেশে আজকের সকাল-সন্ধ্যা বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি সফল হয়েছে বলে দাবি করেন আসিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালের কোটা বাতিলের পরিপত্রের বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়ায় আমরা হাইকোর্টের বারান্দায় যেতে চাই না। আমরা পড়াশোনায় থাকতে চাই। আমাদের এক দফা দাবি না মানা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা রাজপথে থাকবেন। নির্বাহী বিভাগকে বলতে চাই, দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি মেনে নিন, যাতে আমরা দ্রুত পড়ার টেবিলে ফিরে যেতে পারি।’
আসিফ মাহমুদের আগে আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘আমাদের দাবি আদালতের কাছে নয়, সরাসরি নির্বাহী বিভাগের কাছে। আদালত কাজ করছেন ২০১৮ সালের পরিপত্র নিয়ে। পরিপত্রের ক্ষেত্রে যেকোনো সিদ্ধান্ত আসতে পারে; কিন্তু আমাদের এক দফা দাবি শুধু রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগ বা সরকারই পূরণ করতে পারে। সব গ্রেডে কোটার যৌক্তিক সংস্কারের বিষয়টি আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ সরকারি চাকরিতে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে কোটাবৈষম্য আরও বেশি। শিক্ষার্থীদের যে দাবি, সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কোটা রাখা, সেটি সামনে রেখে সরকার একটি পরিপত্র বা ডকুমেন্ট জারি করতে পারে। শুধু প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ন্যূনতম কোটাকে আমরা সমর্থন করি। জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে সুবিধা দিলেও এসব কোটা ৫ শতাংশের বেশি রাখার প্রয়োজন হয় না।’
সারজিস আলম আরও বলেন, ‘নির্বাহী বিভাগের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে কমিটমেন্ট, একটি নির্বাহী আদেশ বা পরিপত্র জারি করে একটি কমিশন গঠনের মাধ্যমে এই সমাধানটি করা যেতে পারে৷ এটি সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয় ৷ নির্বাহী বিভাগ বা সরকার চাইলে এই সংবাদ সম্মেলনেই আমাদের শেষ সংবাদ সম্মেলন হতে পারে।’