কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘাতে ২ বছর ধরে বান্দরবানে পর্যটক ভ্রমনে নিষেধাজ্ঞার সংকট কাটতে না কাটতেই জাতীয় নির্বাচন ইস্যুতে বিএনপিসহ বিভিন্ন বিরোধী দলের একের পর এক হরতাল, অবরোধের কারনে বান্দরবানে পর্যটক না আসায় পর্যটনের মৌসুমেও পর্যটক না থাকায় জেলার পর্যটন শিল্পে ধস নেমেছে।
হোটেল মালিকদের সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ অক্টোবর থেকে দফায় দফায় অবরোধ আর হরতালের কারনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আশানুরুপ পর্যটক না আসার কারনে মন্দা ভাব বিরাজ করছে জেলার বিকাশমান পর্যটন শিল্পে। হোটেল মোটেলগুলোতে ৩০% রুম বুকিং হওয়ার কারনে অর্থ সংকটের কারনে মালিকরা তাদের কর্মচারীদের মাসিক বেতন মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। পর্যটকদের উপর নির্ভরশীল গাড়ি, বার্মিস মার্কেট, রেস্টুরেন্ট এর মাসে ক্ষয়ক্ষতি শত কোটি। হোটেল মোটেল দৈনিক ক্ষতি হচ্ছে ৫০ লাখ টাকা।
শহরের হিল ভিউ হোটেলের ম্যানেজার পারভেজ বলেন, শীত মৌসুম ও ছেলে মেয়েদের বার্ষিক পরিক্ষার ছুটি থাকলেও হরতাল, অবরোধের কারনে বান্দরবানে পর্যটক নেই বললেই চলে।
বান্দরবানে পর্যটন শিল্পের বিকাশকে কেন্দ্র করে অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান এবং দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরালেও ফের বেকারের খাতায় নাম লেখাতে হচ্ছে স্থানীয় যুবকদের। পর্যটকদের কেন্দ্র করে শীত মৌসুমে পাহাড়ী নারীদের হাতে তৈরী শাল, গামছাসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করা হলেও পর্যটক না আসার কারনে এসব পন্য বিক্রি হচ্ছে খুব কম।
জেলা শহরের রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ি রাজেশ দাশ বলেন, পর্যটক কম আসার কারনে হোটেল ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়িরা পথে বসার মতো অবস্থা।
আরো জানা গেছে, হোটেল-মোটেলগুলোর মতো দূর যাত্রার ভ্রমনের জন্য জীপ, হাইস, মাইক্রো গাড়ী উচ্চ ভাড়া দিয়ে পাওয়া দূস্কর হলেও এখন ডিসকাউন্ট দিয়ে যাত্রী পাচ্ছেনা। শহরের মেঘলা, নীলাচল, বৌদ্ধ জাদী, চিম্বুক, শৈলপ্রপাত, মিলনছড়ি, প্রান্তিক লেক ও থানচি, রুমা, আলীকদম উপজেলায় এখন অনেকটা পর্যটক শুন্য থাকার কারনে স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়িরা পড়েছে বেকায়দায়। সকাল থেকে স্পটগুলোতে তারা তাদের বিভিন্ন ধরণের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসলেও কোন ক্রেতা পাচ্ছেনা।
এই ব্যাপারে বান্দরবান হোটেল মোটেল মালিক সমিতির অর্থ সম্পাদক রাজিব বড়ুয়া বলেন, আগে ছিলো কেএনএফ সংকট, এখন হরতাল অবরোধের কারনে পর্যটনের ভরা মৌসুমেও পর্যটক না আসায় পর্যটন ব্যবসা বেশ সংকটে।
প্রসঙ্গত, বান্দরবান শহরে হোটেল মোটেল মালিক সমিতির আওতাভুক্ত ৫৫টি হোটেলসহ শতাধিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, গেস্ট হাউস রয়েছে। এছাড়াও পর্যটক পরিবহনে রয়েছে ৪ শতাধিক চাঁদের গাড়ি, ৩ শতাধিক নৌ যান এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অন্তত ২০ হাজার মানুষ পর্যটন ব্যবসার সাথে জড়িত।