খাগড়াছড়িতে বাজার ফান্ডের প্রধান সহকারী মুমিন মিয়া এবং মোল্লা বাজারের চৌধুরী হাসান আলীর বিরুদ্ধে বাজারের প্লট জাল জালিয়াতির মাধ্যমে প্রকৃত মালিকদের দখল না দিয়ে অন্যজনের নিকট হস্তান্তরের/ জবর দখলের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে মানববন্ধন ও খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি দিয়েছেন ভূক্তভোগীরা।
বুধবার সকাল ১১ টায় খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাব প্রাঙ্গনে এ মানববন্ধনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মনমোহিনী রানী। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মোল্লা বাজার ১৯৮৯ ইং সালে অন্যস্থান হতে বর্তমান স্থানে স্থানান্তরিত হয়। পুরাতন বাজারের ব্যবসায়ীরা নতুন বাজারে প্লটের জন্য যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করলেও আজ ৩৩ বছরেও বহু ব্যবসায়ীর প্লট বুঝিয়ে দেয়নি বাজার চৌধুরী ও বাজার ফান্ড কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে অনেক ব্যবসায়ী মারা গেলে তাদের প্লট জাল জালিয়াতির মাধ্যমে অন্যজনের নিকট বিক্রয় করে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন অথবা বাজার চৌধুরী হাসান আলী নিজে অথবা নিজ স্ত্রী, ছেলে মেয়ে অথবা নিকটআত্মীয়দের নামে জবর দখল করে রেখেছেন। হাসান আলীর এসব জাল জালিয়াতি ও দুর্নীতি অনিয়মে সার্বিক অফিসিয়াল সহযোগীতা করেছেন বাজার ফান্ডের প্রধান সহকারী মুমিন মোল্লা। লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, হাসান আলী নিজে ও নিকটআত্মীয়দের নামে বেনামে ৮-১০ টি প্লট দখলে রেখেছেন। বাজারে ১২৭ টি প্লটের অনুমোদন থাকলেও ১৫০টির বেশী প্লট সৃজন করে বেচা বিক্রির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বাজার চৌধুরী ও মুমিন মিয়া।
তাছাড়া, মোল্লা বাজারের চৌধুরী হাসান আলী এ পর্যন্ত বহুবার বাজারের নকশা ও প্লটধারীদের নাম মুমিন মিয়ার সহযোগীতায় নিজের মতো করে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে পরিবর্তন করেছেন। এখনো সে প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছেন। বাজার ফান্ড প্রশাসকের বরাবরে এসব বিষয়ে বহুবার অভিযোগ/ আবেদন করলেও কোন সাড়া বা সহযোগীতা পাননি বলে জানান বক্তারা।
মানববন্ধনে আয়শা বেগম বলেন, ‘‘আমার স্বামী মৃত খলিলুর রহমানের নামে ১১৯ নং প্লট থাকলেও হাসান আলী প্লট দিচ্ছেন না। আবেদন করলেও বাজার ফান্ড কর্তৃপক্ষ কোন উত্তর দিচ্ছে না।’’
প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা হোসেন আলীর ছেলে নাজমুল হোসেন জানান, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হয়েও আমি বাবার প্লট উদ্ধার করতে পারি নাই। হাসান আলী ও মুমিন মিয়ার এত যাদু।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ইমরান হোসেন, রোকেয়া বেগম, নুরুল ইসলাম, মহির উদ্দিন, আব্দুল রাজ্জাক প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ভূক্তভোগীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলা/অভিযোগ দাখিল করে হয়রানি করে আসছেন হাসান আলী। বিগত ০৫,০৫,২০২১ সালে হাসান আলীর এধরনের একটি মিথ্যা অভিযোগের কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি মর্মে বাজার ফান্ড প্রশাসকের নিকট প্রতিবেদন দাখিল করেন মাটিরা্গংা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। এছাড়াও বিগত ১৪,০৬,২০১৭ ইং সালে বাজার চৌধুরী হাসান আলীর বিরুদ্ধে ভূক্তভোগীদের বিভিন্ন সময়ে নানান অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাটিরাংগা থানার ওসি ও তবলছড়ি ইউপির চেয়ারম্যান মো: আব্দুল কাদের একটি যৌথ প্রত্যয়ন পত্র দিয়েছেন। সেই প্রত্যয়ন পত্রে উল্লেখ রয়েছে, বাজার চৌধুরী হাসান আলী ম্যাপে বর্ণিত প্লটধারীদের নিকট চাহিত ৫০ হাজার টাকা হারে না দেওয়ায় প্লট বুঝিয়ে দেননাই। বেশ কয়েকটি প্লট নকল মালিক সাজাইয়া বিক্রয় করিয়াছেন। বাজার রেজিস্ট্রেশনের নামে ৪ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা নিয়েছেন। উক্ত প্রতিবেদনের উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ‘তাহার কার্যকলাপে আমি নিশ্চিত তিনি উপরোক্ত প্লট বিক্রি এবং কৌশলগত আশ্বাস দিয়া গৃহিত টাকা আত্মসাৎ করিবেন। উল্লেখ্য যে, তাহার অবৈধ দখলীয় ৩ টি প্লটও এ যাবত প্রকৃত মালিকের বরাবরে ফেরত দেয় নাই। উপরোক্ত বিষয়াদি নিয়া বাজারে শান্তি শৃংখলা নষ্ট হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে।’