দেশের ৪৬২টি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। কিন্তু প্রতিষ্ঠার ৪৭ বছরেও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের সক্ষমতা অর্জন করতে পারেনি সংস্থাটি। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা এ জন্য আরইবির অদক্ষ ব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদ্যুৎ–ঘাটতি থাকলে নিয়মিত লোডশেডিং স্বাভাবিক ঘটনা; কিন্তু বিদ্যুতের ঘাটতি না থাকলেও বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন গ্রামের মানুষ। সামান্য ঝড়বৃষ্টি হলেই বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ সরবরাহ। কখনো কখনো বিদ্যুৎ ফিরে আসতে লেগে যায় কয়েক দিন। দেশের ৮০ শতাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্ব আরইবির। অথচ এত বড় দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালনে দক্ষতা, সক্ষমতা, জনবল কোনোটাই নেই সংস্থাটির। তাদের ভঙ্গুর বিতরণব্যবস্থার কারণে সাধারণ গ্রাহক শতভাগ বিদ্যুতায়নের সুফল পাচ্ছে না।
তবে আরইবির কর্মকর্তারা বলছেন, এটি মূলত কারিগরি সমস্যা। ঢাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন গোলাকৃতির। এতে এক লাইনে সমস্যা হলে আরেক লাইন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখা যায়। ত্রুটি শনাক্ত করা যায় স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ায়; কিন্তু আরইবির বিতরণ লাইন লম্বা। বন–জঙ্গল, বাড়ি-ঘর, গাছপালার মধ্য দিয়ে এসব লাইন চলে গেছে। লম্বা লাইনে কপারে আচ্ছাদিত তার ব্যবহার করা হয় না। মূল লাইনে অন্তত কপার ব্যবহার করা যেতে পারে, কোথাও কোথাও মাটির নিচ দিয়ে লাইন নেওয়া যেতে পারে।
আরইবির ওপর দায়িত্ব রয়েছে দেশের ৪৬২টি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহের। আরইবির অধীন আছে ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। এ সমিতিগুলো মাঠে কাজ করে। সবচেয়ে বড় এ বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাটির বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বিতরণ লাইন আছে বর্তমানে ৫ লাখ ৩৭ হাজার কিলোমিটার। মোট গ্রাহক ৩ কোটি ৬০ লাখ। অনিয়মিতসহ সংস্থাটির জনবল প্রায় ৪০ হাজার। এর মধ্যে প্রায় ১৭ হাজার কর্মী অনিয়মিত, চুক্তিভিত্তিক। দেশে বিদ্যুতের ৫৮ শতাংশ সরবরাহ করে সংস্থাটি।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পিবিএস) কর্মকর্তারা বলছেন, শতভাগ বিদ্যুতায়নে বিতরণ লাইন ও গ্রাহক বেড়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহের অবকাঠামোর আধুনিকায়ন হয়নি। জনবল–সংকট আছে। এ ছাড়া আরইবির ব্যাপক অনিয়মের পাশাপাশি কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ আছে।