৩টি সাজাসহ সর্বমোট ১৮টি ওয়ারেন্টের পলাতক আসামী আবু ওয়াহেদ “রুবেল”কে রানীর হাট এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে রাঙামাটির কোতয়ালী থানা পুলিশ। রোববার ভোররাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ আরিফুল আমিন।
তিনি প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, আসামী রুবেলের বিরুদ্ধে চেক প্রতারনাসহ বিভিন্ন অভিযোগে দায়েরকৃত মামলাগুলোয় ১৮টি ওয়ারেন্টের পলাতক ছিলেন। তারমধ্যে তিনটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ওয়ারেন্ট ছিলো। এরআগে রুবেল দুইটি চেক প্রতারনা মামলায় সাজাও খেটেছে। হাইকোট থেকে শর্তসাপেক্ষে জামিন নিয়ে আবারও নিজেকে আত্মগোপনে সরিয়ে নেয়। ঈদুল ফিতরের দিন রাঙ্গুনিয়া থানাধীন ইসলামপুরের খলিফাপট্টি এলাকাস্থ নিজস্ব পৈত্রিক ভিটায় রুবেল অবস্থান করছে এমন খবর পায় কোতয়ালী থানা পুলিশ।
পরবর্তী স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা নিয়ে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে নিজ বাসা থেকে রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ আরিফুল আমিন।
রোববার দুপুরে রুবেলকে রাঙামাটির আদালতে প্রেরণ করে কোতয়ালী থানা পুলিশ। রাঙামাটি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার সি ডাব্লিউ মূল্যে রুবেলকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশনা প্রদান করেন।
এদিকে রুবেলে বিরুদ্ধে দায়ের করা চেক প্রতারনা মামলার বাদী আইনজীবি অ্যাডভোকেট রাইসুল কবির হিমুন জানিয়েছেন, রুবেল ও তার মা এবং তার স্ত্রী অর্থ সংকটের সম্মুখীন হয়ে আমার কাছে ১১ শতক জায়গা দেওয়ার কথা বলে তিনজনে ৩০ লাখ টাকা নিয়ে যায়। এরপর টাকা দেওয়ার কথা বলে আমাকে দুইটি চেক দেয়। এই চেকগুলো আমি ব্যাংকে নিয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট্যদের একাউন্টে টাকা না থাকায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সেগুলো ফেরৎ প্রদান করে।
এরপরও আমি রুবেলের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হই। সে তার সকল যোগাযোগ বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে যায়। পরে বাধ্য হয়ে আমি আইনে আশ্রয় নিয়েছি।
অ্যাডভোকেট রাইসুল জানান, রুবেল রাঙামাটির বিভিন্ন জনের কাছ থেকে প্রায় দুই কোটি টাকার মতো নিয়ে গেছে বলে আমি জানতে পেরেছি। রহিম নামের একজনেই পায় ৫৫ লাখ টাকা।
জানাগেছে, বয়সে তরুন যুবক রুবেল ইতোপূর্বে রাঙামাটির স্বনামধন্য ব্যবসায়ি আইয়ুব আলীর একমাত্র পুত্র। সে রাঙামাটি শহরের নামকরা ব্যবসায়িও ছিলেন। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই তার ব্যবসার পতন হতে শুরু করে। ঢাকার একটি চক্রের খপ্পরে পড়ে সেখানে একটি জায়গা কিনতে গিয়ে নিজের সকল ব্যবসা ধ্বংস করে রাঙামাটি ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন ব্যবসায়ির কাছ থেকে উচ্চ সূদে লাখ লাখ টাকা ধার নেয়। সেই টাকার সূদেআসলে মিলে কয়েক কোটি টাকা হয়ে যায়। পাওনাদারদের কয়েকজন তার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলে নিয়ে কিছু টাকা আদায় করতে সক্ষম হলেও আরো অনেকেই তার কাছে বিপুল পরিমান টাকা পাবে।